অসুস্থতা, বিপদ-আপদ ও মহামারীতে আমাদের করণীয়
মাওলানা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন ক্বাদেরী <>
রোগ-শোক ও বিপদ-আপদ মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাগান হতে ফুল সংগ্রহ করতে গেলে যেমন কাঁটার আঘাত সহ্য করতে হয়, তেমনিভাবে মানব জীবন পরিচালনা করতে হলেও অনেক বাঁধা-বিপত্তি এবং রোগ-বালাইয়ের শিকার হতে হয়। তাইতো বিজ্ঞ কবি বলেন, “কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে, দু:খ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহিতে?” আরবি বর্ষপঞ্জির সফর মাসকে অনেকে বিপদ-আপদের মাস হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। কিন্তু ইসলাম তা সমর্থন করে না। বিপদ-আপদ ও রোগ বালাইয়ের জন্য কোন মাস বা সময় দায়ী নয়। তাহলে রোগব্যাধি, বিপদ-আপদ ও মহামারী কেন আসে? হাদিসে শরীফের বর্ণনা মতে, পরীক্ষা করার জন্য অথবা, মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আল্লাহ পাক বান্দাহকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখী করেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে তা কিছু মানুষের কৃতকর্মেরই ফসল। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- ظَهَرَ الْفَسَادُ فِيْ الْبَرِّ وَ الْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيْ النَّاسِ لِيُذِيقَهُمْ بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوْا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ. অর্থাৎ ‘স্থলে ও জলে তথা সারা বিশে^ মানুষের কৃতকর্মের কারণে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে। মুফাসসিরিনে কিরাম বলেন, বিপর্যয় বলতে আয়াতে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকান্ড, পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনাবলীর বৃদ্ধি পাওয়া, সবকিছু থেকে বরকত উঠে যাওয়া, উপকারী বস্তুর উপকার কম হওয়া এবং ক্ষতি বেশী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি আপদ-বিপদ বুঝানো হয়েছে। পার্থিব বিপদাপদের কারণ হলো- মানুষের গুনাহ ও অপকর্ম। তম্মধ্যে শিরক ও কুফর সবচেয়ে মারাত্মক। অত:পর অন্যান্য গুনাহ। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيْكُمْ وَ يَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ. অর্থাৎ ‘তোমাদের উপর যেসব বিপদাপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল এবং তিনি (আল্ল¬াহ) তোমাদের অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন।’
আসলে সকল গুনাহের কারণে বিপদ-আপদ আসে না। অনেক গুনাহ আল্লাহ পাক দয়া করে ক্ষমা করে দেন। দুনিয়াতে প্রত্যেক গুনাহের কারণে বিপদ আসলে এবং পাপের শাস্তি যথাযথ প্রদান করলে একজন মানুষও পৃথিবীতে বেঁচে থাকত না। আল্লাহ পাক বান্দাহর অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন। যে গুনাহগুলো ক্ষমা করেন না সেগুলোর শাস্তিও পুরোপুরি প্রদান করেন না। বরং সামান্য পরিমাণ শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করান। যেমন: অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, لِيُذِيْقَهُمْ بَعْضَ الَّذِيْ عَمِلُوْا অর্থাৎ যাতে আল্লাহ পাক কোন কোন পাপের শাস্তি আস্বাদন করান। গুনাহের কারণে দুনিয়াতে বিপদাপদ প্রেরণ করা আল্লাহ পাকের দয়া। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে গাফেল মানুষকে সাবধান করা। যাতে সে গুনাহ থেকে বিরত হয়। এটা মুলত: তার জন্য নেয়ামত। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- مَا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللهِ وَمَا أَصَابَكَ مِنْ سَيِّئَةٍ فَمِنْ نَفْسِكَ. অর্থাৎ “আপনার যে কল্যাণ হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর আপনার যে অকল্যাণ হয়, সেটা আপনার নিজের কারণে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيْبَةٍ فِيْ الْأَرْضِ وَلَا فِيْ أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِيْ كِتَابٍ مِنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا. অর্থাৎ “পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপদাপদ আসে, তা সবই কিতাবে অর্থাৎ লওহে মাহফুযে জগৎ সৃষ্টির পূর্বেই লিপিবদ্ধ আছে।
উপরোল্লিখিত আয়াতসমূহ বিশেষভাবে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাদের দ্বারা গুনাহ সংঘটিত হতে পারে। নবী-রাসূণগণ মাসুম নিষ্পাপ হয়ে থাকেন। তাছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকা ও উম্মাদ ব্যক্তি দ্বারাও কোন গুনাহ হতে পারে না। তারা যদি কোন কষ্ট ও বিপদাপদে পতিত হয়, তবে তারা উপরোক্ত আয়াতের অন্তর্ভুক্ত নয়। তাদের কষ্টের অন্য কারণ ও রহস্য লুকায়িত রয়েছে। আর তা হচ্ছে তাঁদেরকে পরীক্ষা করা এবং পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা। ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাউকে বিপদে পতিত দেখলে এ কথা বলা যাবে না যে, সে বড় গুনাহগার। কাউকে সুখী দেখলে বলা যাবে না যে, সে নেককার বড় বুযর্গ ও সৎকর্মপরায়ণ। বলা বাহুল্য, যে ব্যক্তি কোন গুনাহ করে সে বিশে^র সকল মানুষ, জীবজন্তু ও পশু-পাখিদের প্রতি চরম অবিচার করে। কেননা, তার কারণেই সকল প্রাণী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই কিয়ামতের দিন সবাই গুনাহগারের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে নালিশ পেশ করবে। বিভিন্ন অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের কারণে আল্লাহ পাক মানুষের কাছ থেকে কঠিন কঠিন পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে- عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِيْنَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيْتُمْ بِهِنَّ ، وَأَعُوْذُ بِاللهِ أَنْ تُدْرِكُوْهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِيْ قَوْمٍ قَطُّ ، حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا ، إِلَّا فَشَا فِيْهِمُ الطَّاعُونُ ، وَ الْأَوْجَاعُ الَّتِيْ لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِيْ أَسْلَافِهِمُ الَّذِيْنَ مَضَوْا ، وَلَمْ يَنْقُصُوْا الْمِكْيَالَ وَ الْمِيزَانَ ، إِلَّا أُخِذُوْا بِالسِّنِيْنَ، وَشِدَّةِ الْمَئُوْنَةِ ، وَ جَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ ، وَ لَمْ يَمْنَعُوْا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ ، إِلَّا مُنِعُوْا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ ، وَلَوْلَا الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا ، وَلَمْ يَنْقُضُوْا عَهْدَ اللهِ وَ عَهْدَ رَسُوْلِهِ ، إِلَّا سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ ، فَأَخَذُوْا بَعْضَ مَا فِيْ أَيْدِيْهِمْ ، وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللهِ وَ يَتَخَيَّرُوْا مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ إِلَّا جَعَلَ اللهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ. (رَوَاهُ إِبْنِ مَاجَه) অর্থাৎ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও।
১.যখন কোন সম্প্রদায়ের মাঝে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনও দেখা যায়নি।
২.যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাণে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসিবত।
৩.যখন যাকাত আদায় করেনা তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভূ-পৃষ্টে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকত তাহলে আর কখনও বৃষ্টিপাত হতো না।
৪.যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তার রাসূলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায় সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়।
৫.যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মিমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরষ্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেন।”
তাছাড়া মানুষের বদ অভ্যাসের কারণে বিভিন্ন রোগব্যাধি ও মুসিবত আসে। যেমন: অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকা, দাঁড়িয়ে পেশাব করা, ধুমপান করা, নখ লম্বা রাখা, অতিরিক্ত লম্বা চুল রাখা, মদ, গাঁজা ইত্যাদি নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করা ও বিভিন্ন হারাম প্রাণীর গোশত ভক্ষণ করা।
মহামারী, রোগব্যাধি ও বিপদ-আপদে ধৈর্য্য ধারণ করা
সকল বিপদ-আপদ ও বাঁধার পাহাড় অতিক্রম করে জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন সীমাহীন ধৈর্য্যরে। অস্থিরতা কোন সুফল বয়ে আনতে পারে না। কেননা, এই ক্ষণস্থায়ী জগতে রোগ-শোক, বিপদ-আপদ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ হতে বান্দাহর জন্য চরম ধৈর্য্যরে পরীক্ষা। তাই আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ও অবিচল থাকাই ঈমানদারের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব। আল্লাহ পাক বলেন, وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِيْنَ. الَّذِيْنَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُصِيْبَةٌ قَالُوْا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ. অর্থাৎ ‘এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্য্যশীলদেরকে ; যখন তারা বিপদে পতিত হয় তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব।’ আয়াতে বর্ণিত পরীক্ষাসমূহ আল্লাহর ইচ্ছা ও হুকুমেই হয়ে থাকে। আল্লাহ পাক বলেন, وَمَا تَسْقُطُ مِنْ وَرَقَةٍ إِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الْأَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِيْ كِتَابٍ مُبِيْنٍ. অর্থাৎ ‘কোন পাতা পতিত হয় না তাঁর অবগতি ব্যতিত। এমনকি কোন বীজ মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আদ্র ও শুষ্ক দ্রব্য পতিত হয় না। কিন্তু তা সব প্রকাশ্য কিতাবে রয়েছে।’ বান্দাহর গুনাহ মাফের জন্য অথবা মর্যাাদা বৃদ্ধির জন্য এটা মহান উছিলা। সুতরাং আল্লাহর সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মধ্যেই রয়েছে পরম সফলতা। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, وَالصَّابِرِيْنَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِيْنَ الْبَأْسِ أُولَئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوْا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُتَّقُوْنَ.
অর্থাৎ ‘অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্যশীলরাই হলো সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই হলো পরহেযগার।’
নবী-রাসূলগণ তাঁদের জীবনে অনেক কঠিন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন। এ বিষয়ে বুখারী শরীফে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায় রয়েছে। যেমন: بَابٌ: أَشَدُّ النَّاسِ بَلاَءً الأَنْبِيَاءُ ، ثُمَّ الأَمْثَلُ فَالأَمْثَلُ (بُخَارِىْ :كِتَابُ المَرْضى) অর্থাৎ ‘দুনিয়াতে নবীগণের উপর সর্বাধিক বিপদাপদ আসে। অত:পর তাঁদের নিকটবর্তী, এরপর তাঁদের নিকটবর্তীদের উপর।’ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নমরূদের প্রজ্জ্বলিত আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়া, হযরত মুসা আলাইহিস সালাম ফেরআউনের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দলবলসহ নিজেকে লোহিত সাগরে নিক্ষেপ করা, হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম দীর্ঘ ১৮বছর যাবৎ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে ধনসম্পদ, সন্তান-সন্তুতি, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, হযরত ইউনুচ আলাইহিস সালাম সমূদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে মাছের পেটে আশ্রয় গ্রহণ করা ইত্যাদি ছিল চরম ধৈর্য্যরে পরীক্ষা। তবুও তাঁরা সর্বোচ্চ ধৈর্য্যরে সাথে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আল্লাহর পক্ষ হতে পুরষ্কার লাভে ধন্য হয়েছেন। মানুষের যাবতীয় দু:খ-কষ্ট ও সংকটের গ্যারান্টিযুক্ত প্রতিকার রয়েছে দুটি কাজে। একটি হলো- ধৈর্য্য আর অন্যটি হলো- নামায। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ. অর্থাৎ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ পাক ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।’ ধৈর্য্য বা সবর দুই প্রকার। যথা: ১. اَلصَّبَرُ عَلى المُصِيْبَةِ ২. اَلصَّبَرُ عَلى الطَّاعَة যে কোন বিপদে-মুসিবতে নিজেকে সংযত রাখা এবং ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা। যে কোন ইবাদতে ধৈর্য্যরে প্রয়োজন। তথাপি নামাযের কথা বিশেষভাবে বলার উদ্দেশ্য হলো- নামায এমন একটি ইবাদত, যা আদায়ে চরম ধৈর্য্যরে পরিচয় দিতে হয়। এতে দুনিয়ার অনেক হালাল কাজও হারাম হয়ে যায়। অন্য ইবাদতে তা হয় না। তাই নামাযের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে আল্লাহর দরবারে।
মহামারী ও সংক্রামক রোগ থেকে সতর্কতা
সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ পাওয়া যায় পবিত্র কুরআনে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, وَلَا تُلْقُوْا بِأَيْدِيْكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ অর্থাৎ ‘তোমরা নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না’। আয়াতের প্রসঙ্গ যদিও জিহাদ বিষয়ে তথাপি ইসলামের স্বার্থে বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ করা থেকে বিমুখ হয়ে ঘরে বসে থাকা যেমন ইসলাম ও মুসলিম জাতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়, ঠিক তেমনি নিজ পরিবার-পরিজন ও গোটা মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষার্থে মহামারী বা সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সতর্কতা ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করাও নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। আলোচ্য আয়াত প্রসঙ্গে হযরত বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, পাপের কারণে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত থেকে নিরাশ হওয়াও নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। মাগফিরাত থেকে নিরাশ হওয়া হারাম। আল্লাহ পাক কোন বান্দাহর ক্ষতি বা ধ্বংস কামনা করেন না। তাই বান্দাহ নিজেকে হেফাজত করার জন্য সর্বদা আল্লাহ পাক উপদেশ দিয়ে থাকেন। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, وَلَا تَقْتُلُوْا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيْمًا. অর্থাৎ তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না, নি:সন্দেহে আল্লাহ পাক তোমাদের প্রতি দয়ালু।’ যে কোন অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড যেমন : হালালকে হারামের সাথে মিশ্রিত করে বা অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ভক্ষণ করার ব্যাপারে যদিও আলোচ্য আয়াতে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে, তথাপি বান্দাহর ক্ষতি বা ধ্বংস থেকে বান্দাহকে বাঁচানোই আল্লাহ পাকের একমাত্র উদ্দেশ্যে। সুতরাং বান্দাহ নিজেও নিজেকে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে সদা সচেষ্ট থাকবে। মহামারী ও সংক্রামক রোগ থেকে আমাদেরকে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নবীজি ইরশাদ করেন, عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ ذَكَرَ الطَّاعُوْنَ ، فَقَالَ بَقِيَّةُ رِجْزٍ ، أَوْ عَذَابٍ أُرْسِلَ عَلَى طَائِفَةٍ مِنْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ ، فَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَ أَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوْا مِنْهَا ، وَ إِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَ لَسْتُمْ بِهَا فَلاَ تَهْبِطُوْا عَلَيْهَا. (رَوَاهُ التِّرمِذِيُّ) অর্থাৎ ‘হযরত উসামা বিন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবীজি একদিন ‘তাউন’ রোগ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। অত:পর তিনি বলেন, এটা মূর্তি পুঁজার পরিণাম বা বনি ইসরাইলের একটি গ্রুপের উপর পাঠানো হয়েছিল। যদি তোমরা শুনতে পাও যে, কোন জনপদে প্লেগ বা মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, আর তোমরা তথায় অবস্থান করছো তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না। আর যদি কোন জনপদে প্লেগ বা মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটে তোমরা তথায় গমন করবে না।’ অপর হাদিসে বর্ণিত আছে, عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ لَا تُدِيْمُوا النَّظَرَ إِلَى الْمَجْذُوْمِيْنَ. (رَوَاهُ إِبْنِ مَاجَه)
অর্থাৎ হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবীজি ইরশাদ করেন, তোমরা কুষ্ঠ রোগীর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকো না। উপরোক্ত যে সকল হাদিসে পালানোর কথা উল্লেখ আছে তা সতর্কতার উপর নির্ভরশীল। পক্ষান্তরে নবীজি সংক্রামক রোগীর সাথে খাবার খেয়ে বুঝিয়েছেন যে, এতে কোন সমস্যা নেই। সংক্রমণের ভয়ে পালিয়ে থাকা জরুরী নয়। ইমাম বায়হাকী ও মুহাদ্দিস ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে সকল হাদিসে সংক্রমণ বলতে কিছু নেই বলা হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কোন রোগেরই সংক্রমণের ক্ষমতা নেই। জাহেলি যুগের মানুষগুলো যা বিশ^াস করতো রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কোন রোগ নিজ ক্ষমতায় সংক্রমিত হতে পারে না। পক্ষান্তরে যে সব হাদিসে সংক্রমণ হতে পারে বুঝা যায় তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- কোন কোন রোগের মাঝে আল্লাহ সংক্রমণের ক্ষমতা দান করেন। এটা রোগের ক্ষমতা নয় বরং আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা।
রোগ নিরাময়ে চিকিৎসা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- وَ إِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِيْنِ. “আমি যখন অসুস্থ হই তিনি শেফা দান করেন।” রোগের সম্পর্ক নিজের দিকে করা এবং শেফার সম্পর্ক আল্লাহর দিকে করাই হলো আদব। আল্লাহ পাক মানুষকে রোগ দেন আবার শেফাও দান করেন। দুনিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে উসিলা মাত্র। সুস্থতা দানকারী স্বয়ং রাব্বুল আলামীন। রোগ নিরাময়ের উসিলা হিসাবে আমাদেরকে ঔষধ সেবন করতে হবে এবং চিকিৎসাও গ্রহণ করতে হয়। এ প্রসঙ্গে নবীজি ইরশাদ করেন,
يَا عَبْدَ اللهِ تَدَاوَوْا فَإِنَّ اللهَ لَمْ يَضَعْ دَاءٌ إِلَّا وَضَعَ لَهُ شِفَاءٌ أَوْ قَالَ دَوَاءٌ إِلَّا دَاءً وَاحِدًا ..اَلْهَرَمُ. অর্থাৎ “হে আল্লাহর বান্দাহগণ! তোমরা ঔষধ ব্যবহার কর। আল্লাহ পাক যত রোগ সৃষ্টি করেছেন সকল রোগের ঔষধও সৃষ্টি করেছেন, একটি মাত্র রোগ ছাড়া, আর তা হলো বার্ধক্য।” চিকিৎসার পাশাপাশি পানাহারের প্রতি অধিক সতর্ক হওয়ার জন্য নবীজি নির্দেশ দিয়েছেন। অসুস্থ মানুষের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য গ্রহণ নিষেধ। ডাক্তারের পরামর্শ মূলত: ইসলাম ধর্মেরই নির্দেশনা। অপর হাদিসে বর্ণিত আছে,হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবীজি ইরশাদ করেন, একদা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহর নিকট প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ! রোগ-ব্যাধি কার পক্ষ হতে আসে? আল্লাহ পাক বললেন, আমার পক্ষ হতে। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তাহলে ঔষুধ কার পক্ষ হতে? উত্তরে আল্লাহ পাক বলেন, আমার পক্ষ হতে। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আবারও প্রশ্ন করলেন, তাহলে চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার প্রয়োজন কী? আল্লাহ পাক উত্তর দিলেন, চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে। কেননা, চিকিৎসকের মাধ্যমে ঔষধ পাঠানো হয়ে থাকে।
বিপদ ও আজাব মুক্তিতে আযানের গুরুত্ব
আযান এলাকাবাসীদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করে। কারণ, আযানের চেয়ে উত্তম ধ্বনি আর নেই। নবীজি ইরশাদ করেন, إِذَا أُذِّنَ فِيْ قَرْيَةٍ أَمَنَهَا اللهُ مِنْ عَذَابِهِ ذَلِكَ الْيَوْمِ. (اَلْمُعْجَمُ الْكَبِيْرِ) “যখন কোন এলাকায় আযান দেয়া হয়, আল্লাহ পাক এলাকাবাসীদের ঐ দিনের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন।
অসুস্থ ও বিপদগ্রস্থদের প্রতি আমাদের করনীয়
অসুস্থ ও বিপদগ্রস্থদের প্রতি আমাদের করনীয় সম্পর্কে নবীজি ইরশাদ করেন, عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لِلْمُؤْمِنِ عَلَى الْمُؤْمِنِ سِتُّ خِصَالٍ يَعُودُهُ إِذَا مَرِضَ وَ يَشْهَدُهُ إِذَا مَاتَ وَ يُجِيبُهُ إِذَا دَعَاهُ وَ يُسَلِّمُ عَلَيْهِ إِذَا لَقِيَهُ وَ يُشَمِّتُهُ إِذَا عَطَسَ وَ يَنْصَحُ لَهُ إِذَا غَابَ أَوْ شَهِدَ. (رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَ مِشْكَوةُ المْصَابِيْحِ) অর্থাৎ হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, এক মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের ছয়টি হক বা অধিকার রয়েছে। যেমন: ১. যখন সে অসুস্থ হবে তার সেবা শুশ্রুষা করবে ২. যখন সে মৃত্যু বরণ করবে তার জানাযায় উপস্থিত হবে ৩. যখন আহ্বান করবে তার আহ্বানে সাড়া দিবে ৪. যখন সাক্ষাত হবে তখন সালাম দিবে। ৫. হাঁচি দিলে হাঁচির উত্তর দিবে ৬. তার উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে কল্যাণ কামনা করবে। অপর হাদিসে বর্ণিত আছে, عَنِ البَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ بِسَبْعٍ وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ أَمَرَنَا بِعِيَادَةِ المَرِيضِ وَ اِتِّبَاعِ الْجِنَازَةِ وَتَشْمِيْتِ العَاطِسِ وَ إِجَابَةِ الدَّاعِي وَ إِفْشَاءِ السَّلاَمِ وَ نَصْرِ المَظْلُومِ وَ إِبْرَارِ المُقْسِمِ ، وَ نَهَانَا عَنْ خَوَاتِيْمِ الذَّهَبِ وَ عَنِ الشُّرْبِ فِيْ الفِضَّةِ أَوْ قَالَ آنِيَةِ الفِضَّةِ وَ عَنِ المَيَاثِرِ وَ القَسِّيِّ وَ عَنْ لُبْسِ الحَرِيْرِ وَ الدِّيْبَاجِ وَ الإِسْتَبْرَقِ. (رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ) অর্থাৎ হযরত বারা ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি আমাদেরকে সাতটি কাজের নির্দেশনা দিয়েছেন। ১. রোগীর সেবা করা ২.জানাযার পশ্চাতে চলা ৩. হাঁচি দাতার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলে উত্তর দেয়া ৪.দুর্বল মানুষের সাহায্য করা। ৫. পীড়িতদের সাহায্য করা ৬.সালামের প্রচার-প্রসার ঘটানো ৭.কসমকারীর কসমকে পূর্ণ করতে সাহায্য করা। আর তিনি আমাদেরকে স্বর্ণের আংটি পরিধান করতে, রুপার পাত্রে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন। অথবা বর্ণনাকারী বলেন, নবীজি বলেছেন রুপার পাত্রের কথা। তিনি আরো নিষেধ করেছেন হিং¯্র জন্তুর চামড়া ব্যবহার করতে, অচল মূদ্রা ব্যবহার করতে, সিলকের কাপড় পরিধান করতে, রেশমী বস্ত্র ব্যবহার করতে এবং সোনালী সুতায় কাজ করা রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে। অপর হাদিসে বর্ণিত আছে, عَنْ أَبِىْ مُوْسى الْاَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ أَطْعِمُوْا الْجَائِعَ وَ عُوْدُوا الْمَرِيْضَ وَ فُكُّوْا الْعَانِيَ. (رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَ مِشْكَوةُ الْمَصَابِيْحِ) অর্থাৎ হযরত আবু মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, তোমরা ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, রোগীর সেবা কর এবং বন্দীকে মুক্ত কর। অপর হাদিসে বর্ণিত আছে, عَنْ أَبِىْ سَعِيْدِنِ الْخُدُرِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِذَا دَخَلْتُمْ عَلَى الْمَرِيْضِ فَنَفِّسُوْا لَهُ فِيْ أَجَلِهِ فَإِنَّ ذَلِكَ لَا يَرُدُّ شَيْئًا وَ يُطَيِّبُ نَفْسَهُ. (رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَ إِبْنِ مَاجَه وَ مِشْكَوةُ الْمَصَابِيْحِ) অর্থাৎ হযরত আবু সাঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন রোগীর নিকট তার সেবার উদ্দেশ্যে প্রবেশ কর, তখন তাকে শান্ত¡না দাও এবং তার দুঃখ-লাঘব করার চেষ্টা কর। যদিও এই শান্ত¡না আল্লাহর হুকুমকে পরিবর্তন করতে পারবেনা। কিন্তু রোগীর মনে ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রশান্তি লাভ করবে। আল্লাহ পাক সবাইকে যাবতীয় রোগ-শোক, বিপদ-আপদ ও মহামারী থেকে হেফাজত করুন, আমিন।।
টিকা: সূরা আর রূম, আয়াত : ৪১
‘তাফসীরে রূহুল মা‘আনী’ কৃত: আল্লামা সৈয়দ মাহমুদ আলুসি (রহ.)
সূরা আশ্ শূ‘আরা, আয়াত : ৩০
সূরা আর রূম, আয়াত : ৪১
সূরা আন নিসা, আয়াত : ৭৯
সূরা আল হাদীদ, আয়াত : ২২
‘তাফসীরে বায়জাভী শরীফ’ কৃত: আল্ল¬ামা নাসির উদ্দিন বায়যাভী (রহ.)
ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪০১৯
সূরা আল বাকারা : ১৫৫-১৫৬
সূরা আল আন‘আম : ৫৯
সূরা আল বাকারা : ১৭৭
বুখারী শরীফ, কিতাবুল মরদ্বা, অধ্যায় নং ৩
সূরা আল বাকারা : ১৫৩
সূরা আল বাকারা, আয়াত : ১৯৫
সূরা নিসা : ২৯
তিরমিযী, হাদিস নং ১০৬৫
ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৫৪৩
ফতহুল বারি, ১০/১৯৭, উমদাতুল ক্বারী-২১/২৪৭
সূরা আশ শো‘আরা : ৮০
আল্ মুজামুল কবির, ১ম খন্ড, পৃষ্টা-২৫৭, হাদিস নং ৭৪৬
তিরমিজী শরীফ, হাদিস নং ২৭৩৭, মিশকাত শরীফ, পৃষ্টা- ৩৯৭
বুখারী শরীফ, ৭/১১৩, হাদিস নং ৫৬৩৫
বুখারী শরীফ, সূত্র: মিশকাত শরীফ, পৃ. ১৩৩
তিরমিযী শরীফ ও ইবনে মাজাহ শরীফ, সূত্র: মিশকাত শরীফ, পৃ. ১৩৭
লেখক: মুহাদ্দিস, গহিরা এফ. কে. জামেউল উলূম বহুমুখী কামিল মাদরাসা, রাউজান, চট্টগ্রাম।