মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন কাদেরী
শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদরাসা,
পটিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: বিবাহ্ করার সময় অনেকে রাশি দেখে বিবাহ করে এবং অনেকে রাশির সাথে না মিললে বিবাহ্ করে না এ সম্পর্কে ক্বোরআন-হাদীসের আলোকে সঠিক তথ্যাদি জানালে ধন্য হব।
উত্তর: সাধারণত রাশি দেখা নাজায়েজ বরং কুফরি। বিয়ে-শাদি, বিদেশযাত্রা ও ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদিতে রাশিফলের উপর নির্ভর করা হারাম ও নিষিদ্ধ। কেননা এসব ঈমানের মৌলিক বিষয় তাকদীরের সাথে সাংঘর্ষিক। হাদিসে পাকে রাশিফল এবং গণকের নিকট যাওয়া জাহেলী যুগের এবং বিধর্মীদের কুসংস্কার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গণকের গননাকে বিশ্বাস করাকে কুফরি বলা হয়েছে। এমনকি তারগিব তারহিব গ্রন্থে রয়েছে, যে গণক বা জ্যোতিষীর কাছে গেল, ৪০দিন পর্যন্ত তার তাওবা কবুল হবে না আর বিশ্বাস করলে কাফের হয়ে যাবে। [তারগিব তারহিব, পৃ. ৪৫৯৮]
সুতরাং মুসলিম জীবনে দৈনন্দিন সমস্ত বিষয়ে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা কর্তব্য এবং কুরআন ও হাদীসের অনুসরণ আবশ্যক। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষরা ৪টি বিষয়কে বিবেচনা করবে-
تنكح المراة لاربع لما لها ولحسبها ولجمالها ولدينها فاظفر بذات الدين الحديث…
অর্থাৎ মহিলাকে চার কারণে বিবাহ করা হবে, ১. কন্যার ধন-সম্পদ, ২. তার বংশ মর্যাদা, ৩. তার রূপ-সৌন্দর্য এবং ৪. তার দ্বীনদারী। সুতরাং তোমরা দ্বীনদারীকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দাও। [সহীহ্ বুখারী, মুসলিম, মিশকাত শরীফ, পৃ. ২২৮]
বিধায় ক্বোরআন-হাদীসের বিধান ও বর্ণনা গ্রহণ না করে রাফিশল দেখা বা মঙ্গল অমঙ্গল যাচায়ের জন্য গণকের নিকট যাওয়া এবং তা বিশ্বাস করা বিজাতীয় ও বিধর্মীদের কুসংস্কার। যা মুসলিম নর-নারীদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ও জঘন্যতম অপরাধ।
ইমাম ইবনে নুজাইম রচিত কিতাবুল আশবাহ্ ওয়ান্নাযায়েরসহ হাদীস এবং ফিক্বহের নির্ভরযোগ্য কিতাবে বর্ণিত আছে রাসূলে আকরম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোন গণকের নিকট গমন করবে সে আবুল কাসেম তথা আমি রাসূলের সাথে নাফরমানি করল। আল-হাদিস।
[গমজু উয়ূনিল বাছায়ের, শরহুল আশবাহ্ ওয়ান্নাযায়ের, কৃত. ইমাম হুমভী হানাফী রহ.]