Anjuman-E Rahmania Ahmadia Sunnia Trust

ইমাম বুখারী ও সহীহ বুখারী-এর অনন্যতা

ইমাম বুখারী ও সহীহ বুখারী-এর অনন্যতা

মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ক্বাদিরী>

ভূমিকা
ইলমে হাদীছের আকাশে ইমাম আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা‘ঈল আল-বুখারী (১৯৪হি./৮১০খ্রি.-২৫৬হি./৮৭০খ্রি.) ও তাঁর রচিত ‘আল-জা’মি‘উস-সাহীহ’ তথা বুখারী শারীফ দেদীপ্যমান সূর্যের মতো অদ্যাবধি আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। হাকিমুল হাদীছ ইমাম ইয়াহয়া ইবনু মু‘ঈন আল-আনবারী আল-ইরাক্বী (১৫৮হি./৭৭৫খ্রি.-২৩৩হি./৮৪৮খ্রি.), ইমাম ‘আলী ইবনু মাদিনী আল-বাসরী (১৬১হি./৭৭৮খ্রি.-২৩৪হি./৮৪৯খ্রি.), ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল আল-বাগদাদী (১৬৪হি./৭৮০খ্রি.-২৪১হি./৮৫৫খ্রি.)-এর মতো জগৎবিখ্যাত রতি-মহারতিগণের মাঝে যখন তাঁর আগমন ঘটে তখন তাঁর আলোকছটায় ইনারা সবাই তারায় পরিণত হয়ে যান। হাদীস গ্রন্থ রচনায় ইতঃপূর্বে ইমাম আজম আবূ হানীফা (৮০হি./৭০০খ্রি.-১৫০হি./৭৭০খ্রি.) কর্তৃক ‘কিতাবুল আছার’ ইমাম মালিক ইবনু আনাস (৯৩হি./৭১১খ্রি.-১৭৯হি./৭৯৫খ্রি.) কর্তৃক ‘আল-মুয়াত্তা’, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু ইদ্রীস আশ-শাফি‘ঈ (১৫০হি./৭৭০খ্রি.-২০৪হি./৮২৬খ্রি.) কর্তৃক ‘আল-উম্ম” ইমাম আব্দুর রাজ্জাক আস-সানা‘আনী (ওয়াফাত-২১১হি.) কর্তৃক ‘আল-মুসান্নাফ’ এবং ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল রাহমাতুল্লাহি আলায়হি কর্তৃক ‘আল-মুসনাদ’ গ্রন্থ রচিত হলেও যখন ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর ‘আল-জা’মিউস-সাহীহ’ নামাক গ্রন্থটি প্রণীত হলো তখন অন্যান্য গ্রন্থাবলী রবির সামনে চন্দ্রের মতো হয়ে গেলো। এই অনন্য মর্যাদা ও সম্মান পাওয়ার কারণ হলো- এর রচয়িতা ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর বেপানাহ ত্যাগ-তিতিক্ষা, বিরল খোদভীরুতা, আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর দরবারে গ্রহণযোগ্যতা এবং সংকলনে খোদাদাদ বেমেছাল যোগ্যতার সুনিপুন ক্ষমতা। শাওয়াল মাস এই মহামনীষীর জগৎ মাঝে শুভাগমন-প্রস্থানের অনন্য স্মৃতি বিজড়িত মাস। অত্র প্রবন্ধ তাঁর পবিত্র কদমে নজরানা হিসেবে উপস্থাপিত হলো।

ইমাম বুখারী ’র সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর নাম: মুহাম্মাদ, উপনাম: আবূ আব্দিল্লাহ, উপাধী: ইমামুদ-দুন্ইয়া ফীল-হাদীস, হা’কিমুল হাদীছ, না’সিরু আহা’দীছিন-নাবাভীয়্যাহ্,না’শিরুল-মাওয়ারিছিল-মুহাম্মাদিয়্যাহ্, মু‘জিযাতুন মিন মু‘জিযা’তি রাসূলিল্লাহ, আয়াতুন মিন আয়াতিল্লাহিল-কুবরাহ ‘আলাল ’আরদ্ব, ত্বাবীবু আহাদীছিন-নাবাভী, আমীরুল-মু‘মিনীন ফীল-হাদীছ, আমীরুল মু’মিনীন ফীল-মুহাম্মাদিয়্যাহ, শাইখুল ইসলাম, শাইখুল মুহাদ্দিছীন। পিতার নাম: ইসমা‘ঈল, মাতার নাম: উম্মু মুহাম্মাদ। তাঁর পিতা ইসমা‘ঈল রাহমাতুল্লাহি আলায়হি আপন যুগের সুপ্রসিদ্ধ শীর্ষস্থানীয় বুযর্গ আলিম-মুহাদ্দিছ ও ধনী-সম্মানীয় শ্রেণির লোক ছিলেন। বংশনামা: ইমাম আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনু ইসমা‘ঈল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন আহনাফ (বারদিযবাহ) আল-জু‘ফী আল-বুখারী। তাঁর পরদাদা মুগীরাহ তৎকালীন বুখারার শাসক আবূ আব্দিল্লাহু মুহাম্মাদ বিন জা‘ফর বিন আল-আইমান আল-মুসনাদী আল-জু‘ফী’র হাতে ঈমান আনয়ন করেন। তিনি ১৩ শাওয়াল জুমু‘আবার বাদ জুমু‘আ আব্বাসীয় খলীফা আল-’আমীন (১৭০হি./৭৮৭খ্রি.-১৯৮হি. ৮১৩খ্রি.)-এর শাসন আমলে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পিতৃহারা ইমাম বুখারী মাতৃক্রোড়ে পরম যত্নে- ভালোবাসায় ভাবগাম্ভীর্য ইসলামী পরিবেশে বড় হন। স্থানীয় শিক্ষা শেষে তিনি ইসলামী বিশ্বের ১৯টির বেশী শিক্ষাকেন্দ্র ভ্রমণ করে হাজারের অধিক শিক্ষক হতে ইলমে দ্বীনের নান শাখায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তিনি সনদান ছয় লক্ষ হাদীসের হা’ফিজ ছিলেন। সহীহ বুখারী ছাড়াও পবিত্র কুরআনুল কারীমের পূর্ণাঙ্গ তাফসীর ‘আত-তাফসীরুল কাবীর’সহ তাঁর আরো ২০টি কিতাবের নাম পাওয়া যায়। সমকালীন ক্ষমতাসীন ও পদলেহী মোল্লাদের নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে তিনি ২৫৬ হিজরীর ০১ শাওয়াল পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাতে ‘ইশার নামাযের পর সমরকন্দ থেকে ২ ফারসখ দূরে ‘খরতংক’ নামক স্থানে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে ইন্তিকাল করেন। এই হিসাবে তাঁর জীবনকাল দাঁড়ায় ৬১ বছর ১১ মাস ১৮ দিন।

ইমাম বুখারী এর অনন্য মর্যাদার কারণ
ইলমে দ্বীনের জগতে ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি চির স্মরণীয়-বরণীয় অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি মর্যাদার যে উচ্চ শিখরে সমাসীন হয়েছেন তা তাঁর অনন্য বুযূর্গী ও ফানা ফী-ল্লাহ হওয়ার কারণেই সম্ভব হয়েছে। চীরকুমার এই মহামনীষী মর্যাদার কথা অকপটে সমসাময়িক ‘উলামা-মাশায়িখ এমনভাবে করেছেন যে, সবগুলো একত্রিত করলে একটি বড় গ্রন্থে পরিণত হবে। ইবন হাজার আসক্বালানী বলেন, ‘ইমাম বুখারীর এতো বেশী গুণকীর্তন করা হয়েছে যে, তা লিপিবদ্দ করলে কলম-খাতা শেষ হবে কিন্তু তাঁর প্রশংসাগীতি শেষ হবে না। কেননা, এটি এমন সাগর যার কিনারা তা নিজেই দেখেনি।’ মর্যাদার অনন্য শিখরে উন্নীত হওয়ার তাঁর প্রধাণতম কারণগুলো হলো-

সুদৃঢ় আক্বীদার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি অনন্য মর্যাদার প্রধান কারণ হলো- তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত-এর আক্বীদার উপর আজীবন সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি তাঁর সহীহ গ্রন্থে তৎকালীন বাতিল ফির্কার রদ করে অধ্যায় রচনা করে একজন ধর্মতত্ত্ববিদ ও আক্বীদার ব্যাখ্যাকারী হিসেবে মুহাদ্দিসীনদের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি শুধু আক্বীদা-বিশ্বাসই উপস্থাপন করেননি, ধারাবাহিকভাবে এগুলোর ব্যাখ্যাও করেছেন। বুখারী শরীফের শুরুতে তিনি কিতাবুল-’ঈমান-এর অধীনে ’ঈমান ও আক্বীদা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং বুখারী শরীফের শেষে তিনি আক্বীদা-বিশ্বাসের ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আর উভয় স্থানেই তাঁর স্টাইল হলো- প্রথমে তিনি বর্ণিত বিষয় সংশ্লিষ্ট পবিত্র কুরআনের আয়াত পেশ করেন, হাদীছ পেশ করেন এবং প্রয়োজনে সহাবী ও তাবি‘ঈনদের বাণী ও নির্দেশনাও পেশ করেন। এর দ্বারা তিনি উম্মতকে বুঝাতে চেয়েছেন যে, আক্বীদার উৎস যেমন পবিত্র কুরআন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ এবং সাহাবাগণের উক্তি নির্ভর; অনুরূপভাবে আক্বীদার ব্যাখ্যা ও বিবৃতিসমূহও এই তিন বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। আর এভাবেই আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত আক্বীদার উপর বিশ্বাস রাখবো, মানবো এবং বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করবো।

হালাল সম্পদে জীবন-জীবিকা নির্বাহ
ইলমে দ্বীন অর্জনের জন্য রিযিক হালাল হওয়া পূর্বশর্ত। ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর পিতা যে সম্পদ তাঁর জন্য রেখে গেছেন তা সম্পূর্ণ হালাল ছিলো। হালাল রিযিকে লালিত-পালিত ইমাম বুখারীকে জীবনে হারাম তো দূরে থাক সন্দেহযুক্ত কোন প্রকারের সম্পদও তাঁকে স্পর্শ করেনি। ইমাম আহমাদ ইবনু আবী হাফস রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর পিতা হযরত ইসমা‘ঈল রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর ইন্তিকালের সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর পিতাকে মউতের বিছানায় বলতে স্বয়ং শুনেন, ‘আমার জানা মতে এক দিরহামও হারাম এমনকি সন্দেহযুক্ত মালও আমার সম্পদে নেই।’ সুতরাং বুঝা গেলো- দ্বীনী ইলমে পান্ডিত্যার্জনে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জন্মগত হালালজাদাহ এবং ভক্ষণগত হালালগেজার অধিকারী হতে হবে।

পরনিন্দা হতে মুক্ত থাকা
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি কখনো জীবনে কারো নিন্দা করেননি। অপরের নিন্দা মানে মৃতভাইয়ের গোস্ত খাওয়া। তিনি নিজে বর্ণনা করেন, ‘যে দিন থেকে জানলাম গীবত হারাম সে দিন থেকে আমি কারো গীবত করিনি। আরেক বর্ণনায় এসেছে- আমি আশা করি যে যখন আমি আল্লাহর সমানে উপস্থিত হবো তখন কারো গীবতের বিষয়ে আমাকে হিসাব দিতে হবে না।’

ইলমী সম্মান রক্ষা করণ
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি দুনিয়ার সব কিছু থেকে দ্বীনী ইলমকে বেশী সম্মান করতেন। হাদীস শরীফ বর্ণনার জন্য আদালত (সততা-ইনসাফ) রক্ষা করা আবশ্যক। তিনি এই সততা রক্ষার জন্য নিজের সবকিছু বিসর্জন দিতেও রাজী ছিলেন। একদা সফরকালে এক চোর সাধুর বেশ ধরে পানির জাহাজে তাঁর সফরসঙ্গী হয়। কথার ছলে সে জেনে নেয় যে, ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর নিকট একহাজার দিনার রয়েছে। রাত্রে ঘুমানোর পর সকালে জাগ্রত হয়ে সেই চোর তার এক হাজার দিনার চুরি হয়েছে বলে শোরগোল মাতিয়ে দিলো। এদিকে ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি চোরের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তার নিকট রক্ষিত একহাজার দিনার সমুদ্রের পানিতে ফেলে দিলেন। এদিকে লোকেরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও যখন কারো নিকট কোন দিনার পেলেন না তখন ঐ চোরকে লোকেরা ভর্ৎসনা করে আপন স্থানে চলে গেলেন। সফরের শেষের দিকে চোর ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর নিকট ঐ এক হাজার দিনার কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন- তা আমি সমুদ্রের পানিতে ফেলে দিয়েছি। চোর বললো: আপনি এতো বড় সংখ্যক দিনার নষ্ট করে ফেললেন! তিনি উত্তর দিলেন- “আমার জীবনের অর্জন তো সততার (ثَقَاهَةٌ) দৌলত।” অল্প দিনারের বিনিময়ে আমি এটাকে কিভাবে নষ্ট করে দিতে পারি? (সুব্হানাল্লাহ!)

ইবাদতে ঐকান্তিকতা
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি নামায আদায়ে বেশী ঐকান্তিকতা রাখতেন। তাঁর নামায এতোই খুশু-খুদ্বু সমৃদ্ধ ছিলো যে, ‘একবার নামাযরতাবস্থায় কোন কীট তাঁকে সতেরবার দংশন করার পরও তিনি নামাযচ্যুত হননি। যখন নামায শেষ করলেন, তখন তিনি বললেন, দেখুন তো, নামাযের সময় এমন কী জিনিস যা আমাকে কষ্ট দিয়েছে? পুরো পীঠ ফুলে গিয়েছিল। তাঁকে নামায শেষ করতে বলা হলো। কিন্তু তিনি নামায শেষ করলেন না। তিনি আরো নামায আদায় শেষে বললেন, ‘আমি যে সূরাটি পড়ছিলাম তা শেষ করার আগে নামায শেষ করতে আমার মন চায় নি।’

 ইলমী মুজাহাদাহ
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি জ্ঞানের জন্য মুজাহিদাহ (ত্যাগ-প্রচেষ্টা) সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মাদ বিন আবী হা’তিম ওর্য়ারাক রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, ‘সফরের সময় তিনি ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর সাথে একই ঘরে রাত কাটাতেন। আমি দেখতাম তিনি প্রতি রাত্রে পনের-বিশবার ঘুম হতে জাগ্রত হতেন। প্রত্যেকবার বাতি জ্বালিয়ে হাদীস শরীফে বিভিন্ন বিষয়ে টীকা-টিপ্পনী লিখতেন। এরপর তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। আমাকে একবারের জন্যও জাগাতেন না। আমি একবার আরয করলাম- হুযূর আপনি একা এতো কষ্ট করেন, আমাকেও তো ডাকতে পারেন। জবাবে ইমাম বলেন, তুমি যুবক মানুষ। আমি তোমার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না।’ তাঁর খাবারের কথা উল্লেখ করে ইবনু হাজার আসক্বালানী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, ‘তিনি খাবার খুবই কম খেতেন। আর তিনি খাবারের পরিমাণের বিপরীতে মুজাহিদাহ অনেক বেশী করতেন।’ স্মরণশক্তি প্রখর ও তীব্র হওয়ার জন্য শুকনো খাবার বেশী উপকারী। এজন্য তিনি বেশী শুকনো খাবার গ্রহণ করতেন। একবার তিনি অসুস্থ হলে তাঁর প্রস্রাব পরীক্ষণের জন্য যখন ডাক্তারের নিকট পেশ করা হলো, তখন চিকিৎসকরা তা দেখে বললেন যে, ‘এটি যারা ঝোলযুক্ত তরকারী খান না তাদের প্রস্রাবের মতো। এটা শুনে ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, হ্যাঁ! এটা সত্য। আমি চল্লিশবছর যাবৎ ঝোলযুক্ত তরকারী গ্রহণ করিনা। ডাক্তারের নিকট এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে চিকিৎসকরা বললেন- এর চিকিৎসা হলো ঝোলযুক্ত খাবার গ্রহণ করা। কিন্তু ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি তৎকালীন আলিম-‘উলামাগণের অনুরোধক্রমে তিনি শুষ্ক রুটির সাথে সামান্য চিনিসহ খাবার গ্রহণ করা শুরু করেন।’

রামযান শরীফের সম্মান
রামযান শরীফের প্রথম রাতে তিনি সাথীদের একত্রিত করে তাদের নিয়ে ইমামতিসহকারে তারাবীহর নামায আদায় করতেন। প্রতি রাকা‘আতে বিশটি আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং একই ক্রমে কুরআন মাজীদ খতম করতেন। প্রতিদিন সাহরীর আগে তিনি একতৃতীয়াংশ কুরআন মাজীত পাঠ করতেন এবং তিনদিনে তা একবার খতম করতেন। রামযানের প্রতিটি দিনে একবার পবিত্র কুরআন মাজীদ খতম করতেন এবং খতম শেষে তিনি প্রত্যেকবার সম্মিলিত দো‘আর আয়োজন করতেন। যেন রমযান মাসটি ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর তিলাওয়াতের মাস হয়ে উঠতো। সকাল-সন্ধ্যা এবং সারারাত তিলাওয়াত-এ কুরআন নিয়েই পড়ে থাকতেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট প্রীতম হওয়া
সৈয়্যদুনা ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি পুরোজীবন আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর অনুপম আদর্শ তাঁর বাণীসমূহের মধ্যেই খুঁজে বেড়িয়েছেন। তাঁর বাণীসমূহের খিদমতেই কাটিয়েছেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাতের আনুগত্যের মধ্যে পূর্ণজীবন অতিবাহিত করেন। ইমাম ওর্য়ারাক রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, ‘আমি একদা স্বপ্নে দেখলাম যে, ইমাম বুখারী প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর পেছন পেছন হাঁটছেন। হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেখানে যেখানে তাঁর পা মুবারক রাখছেন পরে তিনিও ঐ একই স্থানে পা রেখে রেখে চলছিলেন।’ ইমাম ফারাবরী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি কোন এক জায়গায় যাচ্ছিলাম। তখন হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন- কোথায় যাচ্ছো? আমি প্রত্যুত্তরে বললাম, হুযূর! আমি মুহাম্মাদ বিন ইসমা‘ঈল বুখারীর নিকট যাচ্ছি। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, যাও! গিয়ে তাঁকে আমার সালাম দিও!’ (সুবহানাল্লাহ!) হযরত আব্দুল ওয়াহিদ বিন আদম ত্বাওয়াভীসী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, ‘এক রাত্রে আমি হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে তাঁর সাহাবাগণকে নিয়ে কোন এক জায়গায় কারো প্রতীক্ষারত দেখলাম। আমি জানতে চাইলাম- হুযূর! কার প্রতীক্ষা করছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, ইমাম বুখারীর। ত্বাওয়াভীসী বলেন, কিছুদিন পর আমার নিকট ইমাম বুখারীর ইন্তিকালের সংবাদ পৌঁছলে আমি চিন্তাকরে দেখলাম- ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর ইন্তিকাল ঐ রাতেই হয়েছিলো যে রাতে আমি স্বপ্নে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে দেখেছিলাম।’ (আল্লাহু আকবার!) সৈয়্যদুনা ইমাম বুখারীর বারেগাহে রাবুবিয়্যত ও দরবারে রিসালাতে এমনি গ্রহণযোগ্যতা অর্জিত ছিলো বলেই খোদ রাহমাতুল্লিল ‘আলামীন সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাঁর জন্য প্রতীক্ষা করেন!

 সহীহ বুখারী শারীফ-এর অনন্য মর্যাদার কারণ
আল্লাহপাক সহীহ বুখারীকে সর্বোত গ্রহণযোগ্যতা দান করেছেন। হাদীস সংকলনের ইতিহাসে ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর আল-জা’মি‘উস-সহীহ উম্মতের সর্বসম্মতিতে সর্বপ্রথম লিখিত এবং ঐশীবানী মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের পর ত্রিশপারা সম্বলিত বিশুদ্ধতম হাদীসগ্রন্থ। এজন্য কুরআন মাজীদের পর সবচেয়ে বুখারী শরীফের উপরই নির্ভর করা হয়। সহীহ বুখারীর এই অনন্য গ্রহণযোগ্যতার পেছনের কারণ হলো-

 হাদীস সংগ্রহ, কন্ঠস্থকরণ ও সংকলনে খোদায়ী নির্দেশনা
সহীহ বুখারী-এর সংকলককে আল্লাহপাক দ্বীন-এ মুহাম্মাদীর সাহায্যকারী হিসেবে বাল্যকাল হতেই নির্বাচন করে নিয়েছেন। মাত্র ছয়বছর বয়সে পবিত্র কুরআনুল কারীম হিফজ করেন। নিজ গ্রামের মকতবে শিক্ষাগ্রহণ কালে তাঁর দশ বছর বয়সেই তিনি হাদীস কন্ঠস্থ করার ব্যাপারে ইলহাম প্রাপ্ত হন। ইতোঃপূর্বে রচিত হাদীস গ্রন্থাবলীর মধ্যে সাহীহ ছাড়াও শায, মুনকার, মাদাল্লাস, মু‘আল্লালসহ সব প্রকারের হাদীস সংকলিত হয়েছে। শুধুমাত্র সহীহ হাদীস সংবলিত হাদীসগ্রন্থ প্রণয়নের জন্য তাঁর উস্তাদ ইমাম ইসহাক ইবনু রাহওয়াই রাহমাতুল্লাহি আলায়হি মনোকমনা ব্যক্ত করলে ইমাম বুখারী তা সংকলনের মনস্থ করেন। সেই সময় ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি স্বপ্নে দেখন যে, তিনি সামনে দাঁড়িয়ে পাখা দিয়ে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারক থেকে মাছি তাড়াচ্ছিলেন। এর ব্যখ্যায় তৎকালীন ‘উলামাসমাজ বলেন, ইমাম বুখারী হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি সম্পর্কিত সকল প্রকার মিথ্যাকথাকে নির্মূল করবেন। এই ব্যখ্যার পর সহীহ হাদীস গ্রন্থ প্রণয়নে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।

 সকল প্রকার হাদীসের আকর
ইমাম বুখারী ‘সহীহ বুখারী’ গ্রন্থে ০৮ প্রকারের হাদীসের সব বিষয়কে অর্ন্তভূক্ত করে সংকলিত করেছেন। এজন্য এর নাম রাখেন- আল-জা’মি‘উল-মুসনাদুস-সাহীহিহুল-মুখতাসারু মিন ’উমূরি রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামা ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়্যামিহি। একজন গবেষক বা হাদীস শিক্ষার্থী সহজেই সব বিষয়ের হাদীছ এই গ্রন্থ হতে খুঁজে নিতে পারবেন। এজন্য বলা হয়- পৃথিবী থেকে যদি কুরআনুল কারীমসহ সকল ধর্মীয় কিতাব উঠিয়ে নেয়া হয় বা নষ্ট করে দেয়া হয়; আর পৃথিবীর কোথাও যদি সহীহ বুখারী’র কোন একটি কপি বিদ্যমান থাকে, তবে তা দ্বারা ইসলামকে আল্লাহর যমীনে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত ও বাস্তবায়িত করা যাবে। (সুবহানাল্লাহ!)

সহীহ বুখারীতে হাদীছ গ্রহণের শর্তাবলী
হাদীস সংকলনের জগতে ইমাম বুখারী তাঁর সাহীহ গ্রন্থে যে শর্তসমূহের ভিত্তিতে হাদীস গ্রহণ করেছেন তা অন্যান্য ইমামগণের শর্তের মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। বিশেষতঃ পঞ্চম শর্তটি (বর্ণনাকারী এবং তাঁর শাইখকে একই যুগের হতে হবে এবং তাঁদের মধ্যে সাক্ষাত হয়েছে এমন প্রমাণ থাকতে হবে।) তাঁর একান্তই নিজস্ব শর্ত; যার কারণে সহীহ বুখারী অনন্য মর্যাদায় সমাসীন হয়েছে। এছাড়া তিনি আপন কিতাবের আলোচ্য বিষয়ই নির্ধারণ করেছেন মুত্তাসিল সনদ যুক্ত সহীহ হাদীস গ্রহণ।

 আল্লাহ ও তাঁর রাসূল-এর বিশেষ দয়াযুক্ত হওয়া
সহীহ বুখারী রচনার ক্ষেত্রে সৈয়্যদুনা ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি দুই হারামাইন শরীফাইনকে নিজের কর্মস্থল হিসেবে নির্বাচন করেন। তিনি মিযাবে রহতের নিচে বসে এর প্রণয়ন শুরু করেন। পরে বিভিন্ন অধ্যায় ও পরিচ্ছেদসমূহ মাদীনা শরীফের রিয়াজুল জান্নায় বসে রচনা করেন। তিনি বলেন, “আমি প্রতিটি হাদীস সহীহ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করার আগে ওযূ এবং গোসল করে দু’রাকা‘আত নাফাল নামায আদায় করতাম। আমি এরপর ইস্তিখারার মাধ্যমে এর বিশুদ্ধতা যাচাই করতাম। হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সুনিশ্চিত ও অকাট্যভাবে বিশ্বাসী না হয়ে তা সহীহ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করিনি।” তিনি ছয়লক্ষ হাদীস থেকে এই গ্রন্থে তাকারারসহ ৭২৭৫ টি এবং তাকারার ছাড়া প্রায় ৪০০০টি হাদীস শারীফ লিপিবদ্ধ করেছেন। যার মধ্যে ২৪১জন রাবী যাঁরা প্রত্যেকেই আপন যুগের কুতুব-আবদাল-আওতাদের মর্যাদায় সমাসীন ছিলেন। প্রত্যেক রাবীর নাম দো‘আ কবুলের মাধ্যম এবং ১১৬৪৬বার দারুদ শরীফ লিপিবদ্ধ হয়েছে; যা এই গ্রন্থকে সর্বপ্রিয়তার আসনে আসীন করেছে।

 রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম )’র দয়া সিক্ত হওয়া
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি যেভাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট প্রিয় ছিলেন তেমনি সহীহ বুখারী শারীফও মাকবুল ছিলো। এমনকি হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম এটিকে নিজের কিতাব বলে আখ্যায়িত করেন। শাইখ আবু যাইদ মারওয়াযী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, একদা আমি হারাম শরীফে রুকন এবং মাকামে ইবরাহীম-এর মাঝে শুয়ে ছিলাম। এমতাবস্থায় হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যিয়ারত নসীব হলো। তিনি আমাকে বলেন, হে আবু যাইদ! কতোদিন তুমি ইমাম শাফি‘ঈ-এর কিতাব পড়বে? আমার কিতাব কেন পড়ো না? আমি জানতে চাইলাম- হুযূর! আপনার কিতাব কোনটি? রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, মুহাম্মাদ বিন ইসমা‘ঈল বুখারীর কিতাবই আমার কিতাব। (সুবহানাল্লাহ!)
ইমাম আবু হামযাহ বলেন, আরিফবিল্লাহগণ থেকে বর্ণিত- যদি কোন বিপদে সহীহ বুখারী পড়া হয় তা রহিত হয়ে যাবে। আর যে নৌকা বা জাহাজে সাহীহ বুখারীর পান্ডুলিপি থাকেব তা কখনো সমুদ্রে ডুববে না। হাফিজ ইবনু কাছীর বলেন, অনাবৃষ্টির দিনে সহীহ বুখারীর তিলাওয়াতের উসিলায় বৃষ্টি বর্ষিত হয়। (আল্লাহু আকবার!)

শেষ কথন
ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ও সহীহ বুখারী ইসলামের আকাশে অত্যুজ্জ্বল দুই নক্ষত্র। আল্লাহপাক উভয়কেই মহান মর্যাদায় সমাসীন করেছেন। ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি আপন যুগের সর্বস্তরের জ্ঞানীগণের প্রশংসায় সিক্ত ছিলেন। তাঁর বিশ্ববিশ্রুত “সহীহ” গ্রন্থটিকে আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম গ্রহণ করে নিয়েছেন। যতোদিন পৃথিবীর আকাশে সূর্য উদয়মান থাকবে ততোদিন ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ও তাঁর ‘সহীহ’ গ্রন্থ সম্মানের উচ্চাসনে সমাসীন থাকবে। আল্লাহপাক আমাদেরকে উভয়ের ফুয়ূযাত দ্বারা ধন্য করুন- আমীন!

টিকা:
– ইমাম বুখারী (রাহ.)-এর মহীয়সী মাতার নাম ইতিহাসে উল্লেখ নেই। তবে লোকেরা তাঁকে তাঁর ছেলের নামে “উম্মে মুহাম্মাদ” মুহাম্মাদের মা’ নামে ডাকতেন। ইমাম বুখারীর একজন আহমাদ নামে বড় ভাই ছিলেন। ২১০ হিজরীতে তাঁর মা ও ভাইসহ হজ্জ্ব করেন। ইমাম বুখারী ইলম অর্জনের নিমিত্তে মাক্কা শরীফে থেকে যান। তাঁর ভাই বুখারায় ফিরে আসেন এবং এখানেই মৃত্যুবরণ করেন। (সূত্র: শামসুদ্দীন আয-যহাবী, তাযকিরাতুল-হুফ্ফাজ, খন্ড-০২, পৃ.নং-৫৫৫।
– ইমাম ইবনু আসাকীর, তারীখু মাদীনাতিত-দিমাশক্ব, খন্ড-৫২, পৃ,নং-৫৩; না’জী মা‘রুফ, ‘আরুবাতিল ‘উলামায়িল-মানসূবীনা লিল-বুলদানিল আ‘জমীয়্যাহ, খন্ড-০২, পৃ.নং–৪৩।
– তারীখু মাদীনাতিত-দিমাশক্ব, প্রাগুক্ত; ড. ‘আলী জুমু‘আ, আল-ইমাম আল-বুখারী ওয়া জা’মি‘উহু, পৃ.নং-১০।
– ইমাম আহমাদ ইবনু আলী আল-খাতীব আল-বাগদাদী, তারীখু বাগদাদ, খন্ড-০২, পৃ.নং-০৬।
– ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, আস্-সিহাহ আস্-সিত্তাহ পরিচিতি ও পর্যালোচনা, পৃ.নং- ৪৬-৪৯।
– ইমাম শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, সিয়ারু ’আ‘লামীন-নুবালা, খন্ড-১২, পৃ.নং-৪৬৮।
– ইমাম ইবনু হাজার আসক্বালানী, হুদা-আস-সারী, খন্ড-০২, পৃ.নং-২৬০।
– ইমাম ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাতহুল-বারী ফী শারহি সাহীহিল-বুখারী, খন্ড-০১, পৃ.নং-৪৭৯।
– প্রাগুক্ত, খন্ড-০১, পৃ.নং-৪৮০।
– আল্লামা সলিমুল্লাহ খাঁন, মুকাদ্দামাতু কাশ্ফুল বারী ফী শারহি সাহীহিল-বুখারী, পৃ.নং-১৩২।
– ফাতহুল-বারী, খন্ড- ০১, পৃ.নং- ৪৮১।
– সিয়ারু ’আ‘লামীন-নুবালা, খন্ড-১২, পৃ.নং-৪০৪; আফতাব-এ বুখারা, পৃ.নং-১২০।
– ফাতহুল-বারী, খন্ড- ০১, পৃ.নং- ৪৮১।
– প্রাগুক্ত।
– ইমাম ইবনু হাজার আসক্বালানী, হুদা-আস-সারী, খন্ড-০২, পৃ.নং-২৬৬।
– প্রাগুক্ত, পৃ.নং-২৬২।
– গুলাম রাসূল সা‘ঈদী, তাযকিরাতুল মুহাদ্দিছীন, পৃ.নং-১৯২।
– ইমাম ইবনুল ‘ইমাদ, শাযরাতুয্-যাহাব, খন্ড-০২, পৃ.নং-১৩৫।
– মুল্লা ‘আলী আল-ক্বারী, মিরকাতুল মাফাতীহ শারহি মিশকাতুল মাসাবীহ, খন্ড-০১, পৃ.নং-১৩।
– ০৮ প্রকারের হাদীছ হলো- সিয়ার, ’আদাব, তাফসীর, ‘আক্বাঈদ, রিক্বাক্ব, ’আশরাত্ব, ’আহকাম এবং মানাক্বিব।
– তাযকিরাতুল-মুহাদ্দিছীন, পৃ.নং-১৯৮।
– আস্-সিহাহ আস্-সিত্তাহ পরিচিতি ও পর্যালোচনা, পৃ.নং- ৪৬-৪৯।
– ইবনু আবী ই‘য়ালা, তাবাকতু হানাবিলাহ, খন্ড-০১, পৃ.নং- ২৫৬; ইবনুল জাওযী, আল-মুনতাজাম, খন্ড-০৭, পৃ.নং-৯৬।
– ইমাম নাবাভী, তাহযীবুল আসমা ওযার-রিজাল, খন্ড-০১, পৃ.নং-৭৫।
– তাযকিরাতুল-মুহাদ্দিছীন, পৃ.নং-১৯৮; আনোয়ার শাহ কাস্মীরী, ফায়যুল বারী, খন্ড-০১, পৃ.নং-২০৪।
– মিরকাতুল মাফাতীহ, খন্ড-০১. ঈৃ.নং-১৪।

লেখক: আরবী প্রভাষক, মকবুলিয়া হাশিমিয়া মাদ্রাসা চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।

 

Share:

Leave Your Comment