Anjuman-E Rahmania Ahmadia Sunnia Trust

শির্‌কের দ্বিতীয় প্রকার-১

শির্‌কের দ্বিতীয় প্রকার-১

= শির্‌কের দ্বিতীয় প্রকার-১ =

শির্‌কের দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে- আমলগুলোতে রিয়া বা লোক দেখানো মনোভাব নিয়ে সম্পন্ন করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ তা’আলা এরশাদ ফরমায়েছেন- فَمَنْ کَانَ یَرْجُوْلِقَآءَ رَبَّہٖ فَلْیَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا وَلاَ یُشْرِکْ بِعَبَادَۃِ رَبَّہٖ اَحَدًا

তরজমাঃ সুতরাং যার আপন রবের সাথে সাক্ষাত করার আশা আছে তার উচিত যেনো সে সৎকর্ম করে এবং সে যেনো আপন রবের ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করে।  [সূরা কাহ্‌ফ, আয়াত-১১০, তরজমা- কান্‌যুল ঈমান, বাংলা সংস্করণ]

অর্থাৎ শির্‌কে আকবর (বৃহত্তম শির্‌ক) থেকেও যেনো বাঁচতে থাকে, ‘রিয়া’ বা লোক দেখানো থেকেও, যাকে ‘শিরকে আস্‌গার’ (ছোটতর শির্‌ক) বলা হয়। [তাফসীর-ই খাযাইনুল ইরফান,  পৃষ্ঠা-৫৫৫, বাংলা সংস্করণ]

রসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- اِیَّاکُمْ وَ الشِّرْکَ الْاَصْغَرَ

অর্থাৎ- তোমরা ছোটতর শির্‌ক থেকে বেঁচে থাকো)! সাহাবা-ই কেরাম আরয করলেন, ‘‘এয়া রসূলাল্লাহ! ছোটতর শির্‌ক কি?’’ হুযূর এরশাদ করলেন, ‘রিয়া’। অর্থাৎ লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে নেক আমল করা। আল্লাহ তা’আলা ওই দিন বলবেন, যেদিন তিনি বান্দাদের আমলগুলোর প্রতিদান দেবেন-

اِذْہَبُوْا اِلٰی الَّذِیْنَ کُنْتُمْ تَرَآءُوْنَہُمْ بِاَعْمَالِکُمْ فِیْ الدُّنْیَا فَانْظُرُوْا ہَلْ تَجِدُوْنَ عِنْدَہُمْ جَزَاءً

অর্থাৎ (হে রিয়াকার বান্দারা!) দুনিয়াতে তোমরা তোমাদের আমলগুলো যাদেরকে দেখানোর জন্য করছিলে তাদের নিকট যাও! দেখো তাদের নিকট কোন প্রতিদান পাও কিনা!

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- মহান আল্লাহ হাদীসে ক্বুদ্‌সীতে এরশাদ করেন- مَنْ عَمِلَ عَمَلاً اَشْرَکَ مَعِیْ فِیْہِ غَیْرِیْ فَہُوَا لَّذِیْ اَشْرَکَ وَاَنَا مِنْہُ بَرِئٌ

অর্থাৎ যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করলো, যাতে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করলো, তবে সে শির্‌কই করলো। আমি তার প্রতি অসন্তুষ্ট। [মুসলিম, ইবনে মাজাহ্‌]

হুযূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান- مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللّٰہُ بِہٖ مَنْ یُرَاءِیْ یُرَآءِی اللّٰہُ بِہٖ

অর্থাৎ যে অন্যকে শোনায়, আল্লাহ পাকও তার বেলায় মানুষকে শোনাবেন, যে অন্য কাউকে দেখায়, আল্লাহও তার সাথে সে ধরনের আচরণ করবেন। [বোখারী ও মুসলিম, রিয়াদ্বুস্‌ সালেহীন, পৃঃ-৪৮১]

হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- رُبَّ صَآءِمٍ لَیْسَ لَہٗ مِنْ صَوْمِہٖ اِلاَّ الْجُوْعُ وَالْعَطْشُ وَرُبَّ قَآءِمٍ لَیْسَ لَہٗ مِنْ قِیَامِہٖ اِلاَّ السَّہْرُُ

অর্থাৎ এমন অনেক রোযাদার রয়েছে, যার রোযায় ক্ষুধা-পিপাসা ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হয় না। আর এমন অনেক রাত জাগরণকারী (রাত জেগে এবাদতকারী)আছে, যাদের রাত জাগা (অনিদ্রা) ছাড়া কোন লাভ হয় না।[ইবনে মাজাহ্‌ শরীফ]

অর্থাৎ যখন নামায-রোযা মহান আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয় না, তখন তা’তে তার জন্য কোন সাওয়াব থাকে না।

[গাউসিয়া তরবিয়াতী নেসাব, পৃ.২৭-২৮]