নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ বিবর্জিত পাঠ্যপুস্তক দেশে নতুন সঙ্কটের সংকেত
ইমরান হুসাইন তুষার
শিক্ষাকে জাতির মেরুদ- বলা হয়েছে। অবশ্যই তা সু-শিক্ষা। আধুনিকতার নামের অশ্লিলতা, ধর্মহীনতা বা ধর্মীয় রীতি-নীতিকে উপেক্ষা কখনোই সু-শিক্ষা হতে পারে না। বর্তমান সরকার জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন এবং বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- সাধারণ শিক্ষাক্রমে এমন কিছু থাকবে না যাতে দেশের বেশির ভাগ জনগণের ঈমান, আকীদা, মননশীলতা, সামাজিক ধ্যান-ধারণার সাথে বৈপরীত্ব দেখা দেবে এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা বজায় রেখে আধুনিকায়ন করা হবে। শতবর্ষের দাবি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, মাদ্রাসা সমূহের ভবন নির্মানের মত কর্মকাণ্ডগুলো এদেশের ইসলাম প্রিয় মুসলিম জনতা খুব আস্থার সাথে গ্রহণ করেছে। তবে সরকারের ঘাড়ে চেপে কিছু শিক্ষাবিদ নাস্তিক্যবাদের বীজ বপন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা প্রগতিশীলতার নামে নাস্তিক্যবাদের প্রতি অতি উৎসাহী। যার প্রতিফলন ঘটেছে ২০২৩ সালের পাঠ্য বইয়ে।
২০২৩ সাল থেকে সারাদেশে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রথম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে স্কুল ও মাদরাসায় অভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে পাঠদান শুরু হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক স্তরে পঠিতব্য দশটি বিষয় হল-বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, গণিত, শিল্প ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও ধর্মশিক্ষা। এ বিষয়গুলো যেমন স্কুলে পাঠদান করা হবে তেমনি সমানভাবে মাদরাসায়ও পাঠদান করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে পাইলটিং কার্যক্রমের জন্য ৬ষ্ট শ্রেণিতে যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হয়েছে, এগুলোর বিভিন্ন বিষয় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বিশ্বাস, আদর্শ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে, বিশেষত মাদরাসা শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক। এগুলো মাদ্রাসা তো দূরে, এ দেশের স্কুলেও পাঠদান করার উপযোগী নয়। শিক্ষকরা মাদ্রাসার জন্য স্বতন্ত্র পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ণের দাবি জানিয়ে আসলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি।
এনসিটিবির দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে যুক্ত হবে দ্বাদশ শ্রেণি। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই ছাপানোর কার্যক্রম চলছে।
কোন্ বইয়ে কী রয়েছে?
পাইলটিং এর জন্য নির্ধারিত ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ১০টি পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে ৯টি পাঠ্যপুস্তকে অত্যন্ত সুকৌশলে ইসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে ভিনদেশী কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরা হয়েছে। ৯টি বই থেকে বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে।
বাংলা
এই বইয়ে কাল্পনিক ও অবাস্তব ছড়া, হিংসা-বিদ্বেষ ও ঝগড়া শেখানোর মতো কল্পনানির্ভর শিক্ষাহীন গল্পের পাশাপাশি কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে গান শোনা, গান শেখা, বাদ্যযন্ত্র যেমন, হারমোনিয়াম, বাঁশি, তবলা, ঢোল ইত্যাদি ব্যবহারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা ও টেলিভিশনের সামনে বসার আগ্রহ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির আগের বাংলা বইতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে একটি কবিতা থাকলেও নতুন বইতে তা রাখা হয়নি। তাঁর সম্পর্কিত নতুন কোনো প্রবন্ধ, কবিতা কিংবা ছড়া অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি। ২০ নং পৃষ্ঠায় রথযাত্রার কথা আলোচিত হয়েছে।
ইংরেজি
এই বইয়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিভিন্ন পৃষ্ঠায় মানুষের সাথে কুকুরের ছবি এবং নেকড়ে বাঘের ছবি দেওয়া হয়েছে, যা ইউরোপীয় সংস্কৃতিরই অংশবিশেষ। তাছাড়া একটি গল্পে হিন্দুদের দুর্গা পূজায় অংশগ্রহণ করে সকলে একত্রে নাচের মাধ্যমে আনন্দ উদযাপনের বর্ণনা রয়েছে। এতে হিন্দুদের পুজায় অংশগ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। যা মুসলমান ও হিন্দু উভয়েরই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও বিশ্বাস থেকে আপত্তিকর।
গণিত
এই বইয়ে বেশিরভাগ অমুসলিম নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান
এই বইয়ে ‘বিবর্তনবাদ’-এর মিথ্যা ও বিতর্কিত তত্ত্ব রয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে কীভাবে বানর বা এই জাতীয় অন্য প্রাণী থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ বর্ণনার পাশাপাশি ছবি দ্বারা এ বিবর্তনকে স্পষ্ট করে দেখানো হয়েছে। তাছাড়া ‘লুসি’ নামক কথিত কঙ্কালকে মানুষের পূর্বসূরী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই লুসির ছবিও দেওয়া হয়েছে বইটিতে। তাছাড়া বইটির অনুসন্ধানী পাঠে পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস বর্ণনায় এমন সব মনগড়া বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে, যা কুরআন-সুন্নাহ ও মুসলামানদের আকীদা বিশ্বাসের পরিপন্থি। বিবর্তনবাদ একটা কুফ্রী মতবাদ। শিরক মিশ্রিত জাহেলি আকিদা। সৃষ্টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ স্পষ্ট ঘোষণা করছেন, অর্থাৎ- “হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনিকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। [সূরা নিসা : ১]
প্রথম মানব হযরত আদম (আলায়হিস্ সালাম), এরপর হযরত হাওয়া (আলায়হাস্ সালাম) এবং তার ধারাবাহিকতায় মানুষের বংশ বিস্তার ঘটছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি সেটাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। পরে আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিণ্ডে পরিণত করেছি। এরপর সেই মাংসপিণ্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি। অতঃপর অস্থি-পিঞ্জরকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি। অবশেষে তাকে এক নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি”। [সূরা মু’মিনূন : ১২-১৪]
এছাড়াও বইটিতে প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস বর্ণনায় প্রাচীন মানুষ ও দেব-দেবীর নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবির পাশাপাশি গ্রীক, বৌদ্ধ ও হিন্দুদের বিভিন্ন দেব দেবীর বর্ণনা ও ভাস্কর্য এবং দেব দেবী সম্পর্কিত নানা অলীক বিশ্বাস তুলে ধরে পৌত্তলিকতা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধ বিহার, হিন্দু মন্দির এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ প্রতিমার বহু ছবি দেওয়া হয়েছে। বৌদ্ধস্তূপে ভক্ত ও উপাসনাকারীদের ছবিও রয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো মসজিদ কিংবা মুসলিম নিদর্শনের ছবি ও বর্ণনা নেই। বাস্তব কিংবা কল্পিত ছবি ও ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবিই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। বিভিন্ন পাঠে প্রকৃতি, অনুসন্ধান, সুরেশ, দীপা, দীপঙ্কর, তিথি, টুকটুক এ ধরনের নামের আধিক্য রয়েছে, যা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। এমনকি একটি লেখায় ‘আনোয়ারা ও আশরাফুন্নেসা’র মতো দুটি সুন্দর মুসলিম নামকে গল্পচ্ছলে হেয় করে ‘বেমানান’ বলা হয়েছে।
বিজ্ঞান
এই বইয়ে পৌরাণিক কাহিনীর আলোকে কালপুরুষের ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ কুরআনের বৈজ্ঞানিক নিদর্শনের কোনো উল্লেখ পুরো বইতে নেই। উপরন্তু মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে কুরআন সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য উপস্থাপিত হয়েছে। বইটিতে ১১ জন উলঙ্গ নারী-পুরুষের ছবি দিয়ে তাদের লজ্জাস্থানের পরিচয় দেয়া হয়েছে এবং ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন অঙ্গের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা
এই বইয়ে ছেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তন সম্পর্কে নির্লজ্জ বর্ণনা রয়েছে, যা ষষ্ঠ শ্রেণিতে অত্যন্ত বেমানান এবং ছাত্র-ছাত্রীদের যৌথ ক্লাসে বেহায়াপনা শিক্ষাদানের শামিল। তাছাড়া ছেলে মেয়েদের পারস্পরিক আগ্রহ, সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয় সংযমের শিক্ষা ব্যতীত উল্লেখ করে ফ্রি-মিক্সিং ও অবাধ যৌনতার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে, যা সমাজ ও দেশে নৈতিক অধঃপতন ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে। উক্ত বইয়ে ‘বয়ঃসন্ধিকালে মনের যত্ন’ অনুচ্ছেদে রাগ নিয়ন্ত্রণে ইসলাম নির্দেশিত সুন্দর পদ্ধতি পরিকল্পিতভাবে পাশ কাটিয়ে ৫০ থেকে ১ পর্যন্ত উল্টো গণনার মতো অবৈজ্ঞানিক কল্পিত পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে।
জীবন ও জীবিকা
এই বইয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের জীবনাচার অনুপস্থিত। প্রতিদিনের কাজে মুসলিম জীবনাচারের উল্লেখ নেই, খাবারের আদব কায়দায় নেই ইসলামী শিষ্টাচার। গান শোনা, নাচ, বাঁশি, হারমোনিয়াম, তবলা, গিটার ইত্যাদি যন্ত্র ব্যবহার করে ভিনদেশী সংস্কৃতির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া সুদভিত্তিক ব্যাংকিং, নাটক, টিভি দেখা ও অনলাইনে কার্টুন দেখার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি
এই বইয়ে দূর্গাপূজার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। ভ্রমণের জন্য দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরে যেতে উৎসাহিত করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে ৯১% মুসলমানের ইতিহাসÑঐহিত্যকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
শিল্প ও সংস্কৃতি
এই বইয়ে মুসলিম কৃষ্টি-কালচার সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। পুরো বইটির মূল উপজীব্য বিষয় সংগীত, নৃত্য, অভিনয় এবং এর তাল, লয়, রস, মুদ্রা ইত্যাদি। এগুলোর বহু বিষয় ইসলামী শিক্ষার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। বইটির প্রচ্ছদও ঢোল, তবলা ও মূর্তির ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। বইটিতে যাত্রাপালা, সার্কাস, বাউল গান, লোকনাটক, পুতুলনাচ ও গানের অনুষ্ঠানকে আমাদের ‘সংস্কৃতির অমূল্য অংশ’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতির শিকড়’ বলা হয়েছে।
পাইলটিং এর বইগুলোতে কুরআন, সুন্নাহ, সাহাবায়ে কেরাম, আহলে বাইত, মুসলিম মনীষী, বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিকদের বানীসহ নীতি-নৈতিকতাবোধ সৃষ্টিকারী বিষয়গুলো উপেক্ষিত। যা মাদ্রাসার শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সঞ্চার করছে। মাদ্রাসা শিক্ষকদের বৃহৎ সংগঠন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের পক্ষ থেকে ১৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। দেশের প্রখ্যাতনামা মাদ্রাসার অধ্যক্ষগণ সম্মিলিতভাবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সংগঠন, সংস্থার পক্ষ থেকেও নানাবিধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রাক্কালে সরকারের এমন কার্যক্রম এদেশের ইসলাম প্রিয় জনতার মনে যে ক্ষোভের জন্ম দেবে তাতে কেবল ক্ষমতাশীনরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারের ঘাড়ে চেপে বসা নাস্তিক্যবাদী শিক্ষাবিদগং দুধের মাছি। তাদের এই চাতুর্যপূর্ণ কৌশল কেবল সরকারকেই বেকায়দায় ফেলবে। অপসাম্প্রদায়িকতা কিংবা ধর্ম নিরপেক্ষতা যাই বলেন না। কেন সেটাকে প্রকৃত ধর্মহীনতায় রূপান্তর করবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান থাকবে। কিন্তু ৯১% মুসলমানদের শিল্প-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে এভাবে উপেক্ষা করা দেশকে এক ভয়াবহ পরিণয়ের দিকে ধাবিত করবে। সরকারকে অবশ্যই দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বিশ^াস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির আলোকে জাতীয় শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পরিমার্জন করতে হবে। বিশেষজ্ঞ আলিম-উলামার সমন্বয়ে এ কাজ সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে ইসলামী বিশ^াস ও আদর্শবিরোধী এবং সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের জীবনাচারের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয় যেন স্কুলের পাঠ্যপুস্তকেও না থকে সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা প্রধান, বইসই ও রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর, হাকিকত কিতাভেবী, ঢাকা ডিভিশন।