মৃত্যুর পর ৪দিনা ফাতিহা করা এবং চেহলাম পালন করা জায়েজ আছে কিনা?
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন কাদেরী
শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদরাসা,
পটিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: মানুষ মৃত্যুর পর ৪দিনা ফাতিহা করা এবং চেহলাম পালন করা জায়েজ আছে কিনা? কোরআন-হাদীসের আলোকে জানালে খুশী হব।
উত্তর: মুসলমান ব্যক্তির ইন্তেকালের পর মৃত ব্যক্তির কবরে সাওয়াব পৌছানোর ব্যবস্থা করাকে শরীয়তের ইমামগণ/আলেমগণ মুস্তাহাব হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন এবং তা শরীয়তসম্মত। ফাতেহা বা ঈসালে সাওয়াব বা মৃত ব্যক্তির রূহে/কবরে সাওয়াব পৌছানো সকলের জন্য অতি উপকারী ও আযাব হালকা হওয়া বিশেষতঃ দরজা/মর্যাদা বুলন্দ হওয়ার বড় উসিলা। ইন্তেকালের পর মৃত ব্যক্তির পক্ষে ভাল কাজগুলো মৃত ব্যক্তির কবরে পৌঁছে। যেমন- এ প্রসঙ্গে আল্লামা ইমাম আলাউদ্দিন আলী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহ. বলেন-
ان الصدقة عن الميت تنفع الميت ويصله ثوابها وهو اجماع العلماء
[تفسير خازن جـ ৪, صفحه ২১৩]
অর্থাৎ নিশ্চয় মৃত ব্যক্তির পক্ষে সদকা করলে মৃত ব্যক্তি উপকৃত হয় এবং তার সাওয়াবও তার কাছে পৌঁছে। আর এটার উপর ওলামায়ে কেরামের ইজমা তথা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। [তাফসিরে খাজেন, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ২১৩]
তাই মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআনখানি, ফাতেহা, চাহরম, চাল্লিশা, কুরআন তেলাওয়াত, মিলাদ-কিয়াম মাহফিল, দান-সদকা, খতমে গাউসিয়া-গেয়ারভী শরীফ, মাসিক-বার্ষিক ফাতেহা, গরীব-মিসকিনদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা এবং সদকায়ে জারিয়া স্বরূপ মসজিদ-মাদরাসা রাস্তা ইত্যাদি নির্মাণ করে দেয়া অত্যন্ত উপকারী, এগুলো ঈসালে সাওয়াবের অন্তর্ভুক্ত। মৃত্যুর চতুর্থ দিবসে অথবা চল্লিশতম দিবসে অথবা মাসিক/বাৎসরিক ফাতেহাখানি, জিয়ারত ও খতমে ক্বোরআন ইত্যাদির ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্য হল মায়্যেতের মাগফিরাত ও রফে দরজাতের জন্য দোয়া করা আর তাঁর কবরে/রূহে সওয়াব পৌঁছানো। সুতরাং এখানে আপত্তির ও গুনাহের কোন কারণ নাই বরং এ সবগুলো নেক আমল ও ইবাদত। আর ইবাদতকে বিদআত ও গুনাহ্ বলা জঘন্যতম অপরাধ ও অজ্ঞতা।
[তাফসীরে খাজেন, জাআল হক, ২য় খন্ড, আমার রচিত যুগ-জিজ্ঞাসা]