Anjuman-E Rahmania Ahmadia Sunnia Trust

ইসমাঈল দেহলভী ও তাক্বভিয়াতুল ঈমান

ইসমাঈল দেহলভী ও তাক্বভিয়াতুল ঈমান

ইসমাঈল দেহলভী ও তাক্বভিয়াতুল ঈমান
– মাওলানা এম.এ. মান্নান =
মাসিক তরজুমানের রজব ১৪৩২ হিজরী সংখ্যায় উপমহাদেশে ওহাবী মতবাদের আমদানীকারক সৈয়দ আহমদ বেরলভী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এবার তাঁরই লিখক ও সহযোগী মৌং ইসমাঈল দেহলভীর কর্ম পদ্ধতির কিছুটা আলোচনা করার প্রয়াস পাচ্ছি। বলাবাহুল্য, পরিকল্পিতভাবে অঘটন পটিয়ানদের ঘটনার পরবর্তী অবস্থা সামাল দেয়ার জন্য কিছু পরিকল্পনা থাকে। ইসমাঈল দেহলভীও উপমহাদেশে ওহাবী মতবাদ আমদানীর সাথে সাথে তার অত্যন্ত জঘন্য ও ঈমান বিধ্বংসী পুস্তক ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’ প্রকাশের পরবর্তী অবস্থা সামাল দেয়ার জন্য কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। এ নিবন্ধে এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো-
তাক্বভিয়াতুল ঈমানপুস্তুকের ইতিকথা
এদিকে উপমহাদেশে সৌদি আরব থেকে ওহাবী মতবাদ অনুপ্রেবেশ করানোর ক্ষেত্রে প্রধান ও মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সৈয়্যদ আহমদ বেরলভী, ওদিকে সাথে সাথে ওহাবী মতবাদের রূপরেখা ও আবেদনগুলো পুস্তকাকারে প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা করেন তাঁরই শাগরিদ ও ছায়ারূপ সহযোগী মৌলভী শাহ্ ইসমাঈল দেহলভী। তিনি ওহাবী মতবাদের প্রবক্তা শায়খ-ই নজদী মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহ্হাব নজদীর লিখিত পুস্তক ‘কিতাবুত্ তাওহীদ’-এর সারসংক্ষেপ বিন্যস্ত করলেন একটি পুস্তকে। ওই পুস্তকের নাম রাখলেন ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’। কিতাবের নাম ‘ঈমানকে মজবুত করা’ হলেও বাস্তব ক্ষেত্রে সেটার উদ্দেশ্য ও প্রভাব ছিলো সম্পূর্ণ বিপরীত।
বিগত ১৭৫১ থেকে ১৮৫৬ ইংরেজী পর্যন্ত সময়সমীমায় যখন উপমহাদেশে বিরাজিত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে অস্থিরতা, অসহায়ত্ব ও দারিদ্র থেকে উত্তরণের জন্য মুসলমানদের ঐক্য, নিয়মশৃংখলা ও মজবুত সাংগঠনিক তৎপরতার প্রয়োজন ছিলো, ঠিক তখনই মৌলভী ইসমাঈল সাহেব দেহলভী ১৫ মুহাররম ১২৪০হিজরী/১৮১৫ ইংরেজীতে ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’ প্রকাশ করলেন। [তাহ্ক্বীক্বুল ফাতাওয়া, পৃ.৫০, প্রকাশক. মুজাম্মাউল ইসলামী, মুবারাকপুর, আ’যমগড়]
অবশ্য হাকীম মাহমূদ আহমদ বরকাতী এ পুস্তুকের প্রণয়ন সাল লিখেছেন ১২৩২হিজরী/১৮১৭ইংরেজি। [শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ আওর উনকা খান্দান, পৃ. ১৯৯]
তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এ কি আছে?
মৌলভী ইসমাঈল দেহলভী তার এ পুস্তক দ্বারা ইসলামী বিশ্বের ‘সাওয়াদ-ই আযম’ (বৃহত্তম দল, যাকে অনুসরণের জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন)-কে কাফির ও মুশরিক বানিয়ে ছেড়েছেন। ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এ ক্বোরআন করীমের বহু আয়াতের   মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে কুফর ও শির্কের এক জঘন্য মানদণ্ড কায়েম করা হয়েছে। তদনুযায়ী মৌলভী ইসমাঈলের সমসাময়িক ও তার পূর্ববর্তী কোটি কোটি মুসলমানও কাফির-মুশরিক সাব্যস্ত হয়। (নাঊযুবিল্লাহ) এমনকি তার পরবর্তী যুগের মুসলিম বিশ্বেরও বেশীর ভাগ মানুষও তার মতে কাফির ও মুশরিক সাব্যস্ত হয়; এতদ্ভিত্তিতে, কোন রাষ্ট্রেই মুসলমানদের সংখ্যা-গরিষ্ঠতা প্রমাণ করা যাবে না। এ কারণে মৌলভী ইসমাঈলের চিন্তাধারাকে গ্রহণ করা অত্যন্ত জঘন্য ও মারাত্মকই হবে। এ কারণেই তাকে ও তার চিন্তাধারাকে সমালোচনা ও পর্যালোচনার ভাট্টিতে পাকিয়ে ভালভাবে দেখে নেয়া এবং তার ভ্রান্তি ও বিভ্রান্তিগুলোকে পৃথক করে দেখা ও দেখানো অতি প্রয়োজন। [আত্বইয়াবুল বয়ান; পৃ.৪৮ ও ৫৫, তাওহীদ কে নাম পর নার ও নূর, পৃ. ৩৫-৩৬]
এখন দেখুন ‘খোদ্ মৌং ইসমাঈল দেহলভী তার এ কিতাব সম্পর্কে কি বলেছেন- ‘সীরাতে সৈয়্যদ আহমদ শহীদ’ নামক পুস্তক পাঠ করলে বুঝা যায় যে, যখন মৌং ইসমাঈল দেহলভী হজ্বে যাবার ইচ্ছা করলেন, তখন তাঁর পীর ও মুর্শিদ সৈয়্যদ আহমদ রায়-বেরলভী, মৌলানা আব্দুল হাই, মৌলানা মুহাম্মদ ইসহাক্ব, মৌলানা মুহাম্মদ এয়াক্বুব, হাকীম মু’মিন খান্ (মু’মিন), মৌলভী ফরীদ উদ্দীন মুরাদাবাদী, মৌলানা আব্দুল্লাহ্ খান আলাভীকে সমবেত করে এক দীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন। আর বললেন-
میں نے یہ کتاب لکھی ہے اور میں جانتاہوں کہ اس میں بعض جگہ ذرا تیزالفاظ بھی آگئے ہیں اور بعض جگہ تشدد بھی ہوگیاہے ‘ مثلاً ان امورکوجو ’’شرک خفی‘‘ تھے ’’شرک جلی‘‘ لکھ دیاگیاہے ‘ ان وجوہ سے مجھے اندیشہ ہے کہ اس کی اشاعت سے شورش ضرورہوگی‘….. گواس سے شورش ہوگی مگر توقع ہے کہ لڑبڑھ کر خود ٹھیک ہوجائینگے ۔
[حکایت اولیاء‘مرتبہ‘اشرفعلی تھانوی مولوی‘ سن اشاعت ندارد‘
ناشرکتب خانہ نعیمیہ دیوبندصفحہ ۹۸ حکایت ۵۹]
অর্থাৎ ‘‘আমি এ কিতাব লিখেছি। আমি জানি যে, তাতে কিছু জায়গায় একটু ধারালো শব্দাবলীও এসে গেছে। কিছু জায়গায় কঠোরতাও হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ওইসব বিষয়ে, যেগুলো ‘শির্কে খফী’ (অপ্রকাশ্য শির্ক) ছিলো সেগুলোকে ‘শির্কে জলী’ (প্রকাশ্য শির্ক) লিখে দেয়া হয়েছে। এসব কারণে আমার আশংকা হচ্ছে- এটা প্রকাশ ও প্রচার করলে বিশৃংখলা অবশ্যই হবে। ………….বিশৃংখলা-গোলমাল এ কারণে হবে ঠিক, কিন্তু আমি আশা করি- যুদ্ধ-বিগ্রহ করে আপসে ঠিক হয়ে যাবে।’’  [হিকায়াত-ই আউলিয়া, সংকলক মৌং আশরাফ আলী থানভী; পৃ.৯৮, হিকায়ত নং-৫৯]
এ পুস্তকের সর্বাধিক অর্জন হলো এ যে, ‘সাওয়াদ-ই আযম’ (আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত)-এর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে এ পুস্তুকের মাধ্যমে এটা ওই প্রথম আওয়াজ ছিলো, যা উপমহাদেশে শোনা গেছে, যাকে শায়খ-ই নজদী মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হাব নজদীর ‘ওহাবী আন্দোলন’-এরই প্রতিধ্বনি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে; এমনকি শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ সাহেবের চিন্তাধারা এবং কর্ম পদ্ধতির মুখপাত্রও বলা যাবে না।         [আনফাসুল আরিফীন; ১৮ পৃষ্ঠার বরাতে আত্বইয়াবুল বয়ান; পৃ.৯০]
এখানে লক্ষ্যণীয় যে, মৌলভী ইসমাঈল দেহলভী সাহেব স্বেচ্ছায় এক জঘন্য অস্থিরতা সৃষ্টিকারী পুস্তক লিখে প্রকাশ করার মতো কাজ করে, তা সংশোধন কিংবা তা থেকে বিরত থাকার পরিবর্তে বলেছেন-لڑبڑھ کر خود ٹھیک ہوجائینگے (লড়বড়্ কর খোদ্ ঠিক হো জায়েঙ্গে) অর্থাৎ যুদ্ধ-বিগ্রহ করে আপসে ঠিক হয়ে যাবে। (মা‘আযাল্লাহ্) কারণ, তিনি জানতেন যে, তার সব কথা নির্বিচারে তার অন্ধ ও স্বার্থপর অনুসারীরা মেনে নিলেও সত্যপন্থী সুন্নী মতাদর্শী ওলামা-মাশাইখ সেটার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবেনই।
বাস্তবেও তাই ঘটেছে। তাক্বভিয়াতুল ঈমানের খণ্ডনে লিখিত কিতাবাদির ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ হয়ে গেছে। উপমহাদেশের  ওলামা-মাশাইখ এহেন জঘন্য ও ঈমান-বিধ্বংসী পুস্তকের খণ্ডনে, সাথে সাথেই সোচ্চার হয়েছেন। ওয়াজ-বক্তৃতা তো আছেই, পুস্তকাদি রচনাও চলতে থাকে অব্যাহত গতিতে। সৈয়্যদ ফারুক্ব ক্বাদেরী সাহেব এর খণ্ডন-পুস্তকের সংখ্যা আড়াইশ’ লিখেছেন। প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহ্ তা‘আলাই জানেন। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণের প্রতিটি ভূ-খণ্ডের ওলামা-ই ইসলাম পুস্তকটির খণ্ডনে অংশগ্রহণ করেছেন। সদ্রুল আফাযিল হযরত সৈয়্যদ নঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী আলায়হির রাহ্মাহ্ তাঁর ‘আত্বইয়াবুল বয়ান ফী রদ্দে ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এর ৯১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘‘আমি ইদারাহ্-ই তাহ্ক্বীক্বাত-ই ইসলামী, ইসলামাবাদ-এর লাইব্রেরীতে দক্ষিণ ভারতের আলিমগণ (বিশেষ করে মাদ্রাসাগুলোর ওলামা-ই দ্বীন)-এর লিখিত পুস্তকাদিতে তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এর খণ্ডন দেখেছি। তন্মধ্যে কয়েকটা কিতাবের নাম পাঠক সমাজের অবগতির জন্য নিম্নে উল্লেখ করার প্রয়াস পাচ্ছি। বিস্তারিত জানার জন্য ‘আন্ওয়ার-ই আফতাব-ই সাদাক্বাত’, ‘সাইফুল জাব্বার’, ‘তাহ্ক্বীক্বুল ফাত্ওয়া’ (উর্দু তরজমা) ইত্যাদি পাঠ-পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিচ্ছি।
নিম্নলিখিত অকাট্য ও প্রামাণ্য কিতাবগুলোতে
তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এর যথার্থ খণ্ডন করা হয়েছে-
০১. মু‘ঈদুল ঈমান -হযরত মাওলানা শাহ্ মাখসূল্লাহ্ সাহেব দেহলভী
০২. হুজ্জাতুল আমল ফী ইবতালিল জাহ্ল -হযরত মাওলানা শাহ্ মূসা সাহেব দেহলভী
০৩. রিসালাহ্ দর তাহক্বীক্বে ইস্তি‘আনাত- হযরত মাওলানা শাহ্ মূসা সাহেব দেহলভী
০৪. তাহক্বীকুল ফাত্ওয়া ফী ইবতালিত্তুগা -হযরত মাওলানা ফযলে হক্ব খায়র আবাদী
০৫. ইমতিনা‘উন্নযীর -হযরত মাওলানা ফযলে হক্ব খায়র আবাদী
০৬. তানযীলুন্ নাযীর ফী নযীরিল বশী-রি ন্নাযীর -হযরত মাওলানা ক্বলন্দর আলী সাহেব যুবায়দী
০৭. সাইফুল জাব্বার -হযরত মাওলানা শাহ্ ফযলে রসূল বদায়ূনী
০৮. আর রীহুদ্ দাইয়্যানী আলা রা’সিল ওয়াস্ ওয়াসিশ্ শয়তানী -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ নবী বখশ্ লাহোরী
০৯. শারহুস্ সুদূর ফী দাফ‘ইশ্ শূরূর- হযরত মাওলানা মুখলেসুর রহমান
১০. মীযান-ই আদালত ফী ইসবাত-ই শাফা‘আত -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সুলতান কানকী
১১. হাদিয়ুল মুদ্বিল্লীন-হযরত মাওলানা করীম উল্লাহ্ দেহলভী
১২. ইযালাতুশ্ শুকুক -হযরত মাওলানা হাকীম ফখরুদ্দীন ইলাহাবাদী
১৩. সহীহুল ঈমান -জমিয়তে ওলামা-ই বেরীলী
১৪. শরহে তোহ্ফা-ই মুহাম্মাদিয়াহ্ ফী রদ্দিল ফিরক্বাতিল মুরতাদ্দিয়াহ্ – হযরত মাওলানা সৈয়্যদ আশরাফ আলী সাহেব গুলশানাবাদী
১৫. যুল ফিক্বার-ই হায়দরী আলা আ’নাক্বিল ওয়াহ্ হাবিয়াহ্ -হযরত মাওলানা সৈয়্যদ হায়দার হোসাইন শাহ্
১৬. রিসালাহ্-ই তাহ্ক্বীক্ব-ই তাওহীদ ও শির্ক -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আহসান পেশ্ওয়ারী
১৭. রিসালাহ্-ই হায়াতুন্নবী -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আবিদ সিন্ধী
১৮. গুলযার-ই হিদায়ত -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সিবগাতুল্লাহ্ মুফতী-ই মাদ্রাজ
১৯. সালাহুল মু’মিনীন ফী ক্বাত্‘ইল খারেজীন -হযরত মাওলানা সৈয়্যদ লুৎফুল হক
২০. তুহ্ফাতুল মিস্ক্বীন ফী জনাবে সাইয়্যেদিল মুরসালীন -হযরত মাওলানা আবদুল্লাহ্ সাহারানপুরী
২১. রসমুল খায়রাত -হযরত মাওলানা খলীলুর রহমান মোস্তফা আবাদী
২২. তাহলীলু মা-আহাল্লাল্লাহ্ -হযরত মাওলানা খলীলুর রহমান মামদূহ
২৩.সাবীলুন্ নাজাহ্ ইলা তাহসীলিল ফালাহ্ -হযরত মাওলানা তুরাব আলী লক্ষেèৗভী
২৪. সফীনাতুন্নাজাত -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আসলামী, মাদ্রাজ
২৫. তাম্বীহুদ্ব্ দ্বোয়াল্লীন ওয়া হিদায়াতুস্ সালেহীন -জমিয়তে ওলামা-ই দিল্লী ওয়া হেরমাঈন শরীফাঈন
২৬. ইহক্বাক্বুল হক্ব -হযরত মাওলানা সৈয়্যদ বদরুদ্দীন হায়দরাবাদী
২৭. খায়রুয্ যাদ্ – হযরত মাওলানা আবুল ’আলা মুহাম্মদ খায়রুদ্দীন মাদ্রাজী
২৮. নি’মাল ইন্তিবাহ্ লি রাফ‘ইল ইশ্তিবাহ্ -হযরত মাওলানা মু‘আল্লিম ইব্রাহীম খতীব
২৯. দাফ্‘উল বোহতান ফী রদ্দে বা’দ্বে আহকাম -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস
৩০. ইহক্বাকুল হক্ব – হযরত মাওলানা নাসীর আহমদ পেশোয়ারী
৩১. তাহ্ক্বীক্বুল হাক্ব্ক্বিল মুবীন – হযরত মাওলানা শাহ্ আহমদ সা‘ঈদ নক্বশবন্দী দেহলভী
৩২. মুন্তাহাল মাক্বাল- হযরত মাওলানা মুফতী সদরুদ্দীন আযরদাহ্ দেহলভী
৩৩. ইযহার-ই হাক্বীক্বত -হক্ব গো
৩৪. নেযামুল ইসলাম -হযরত মাওলানা মৌলভী মুহাম্মদ ওয়াজীহ্
৩৫. তায্কিয়াবুল ঈমান -হযরত মাওলানা নক্বী আলী খান সাহেব বেরলভী
৩৬. জুম্মাহ-ই তালবীসাতে সাওয়াইক্ব -হযরত মাওলানা সৈয়্যদ আবদুস্ সামাদ মওদূদ চিশ্তী
৩৭. আবাতীল-ই ওয়াহ্হাবিয়াহ্ -হযরত মাওলানা আহমদ আলী মিআভী
৩৮. তাক্বদীসুল ওয়াকীল-হযরত মাওলানা গোলাম দস্তগীর ক্বাসূরী
৩৯. আফতাব-ই মুহাম্মদী -হযরত মাওলানা মৌলভী ফক্বীর মুহাম্মদ জীলানী
৪০. ই’লা-ই কালেমাতুল হক্ব -হযরত মাওলানা সৈয়্যদ পীর মেহের আলী শাহ্ চিশতী গোলড়ভী
৪১. গোফ্তগো-ই জুম্মাহ্  -হযরত মাওলানা ক্বাযী ফযল  আহমদ লুধিয়ানী
৪২. আন্ওয়ার-ই আফতাব-ই সদাক্বত -হযরত মাওলানা ক্বাযী ফযল আহমদ লুধিয়ানী।
৪৩. তাসহীহুল ঈমান- হযরত মাওলানা মাহ্বূব আলী মুরাদাবাদী
৪৪. ইবত্বাল-ই আবাত্বীল-হযরত মাওলানা মুহাম্মদ হোসাঈন তামান্না মুরাদাবাদী
৪৫. জিগর শেগাফ- হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফয়যাবাদী
৪৬. হিফযুল ঈমান -হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফয়যাবাদী
৪৭. রুজূমাল্ লিশ্ শায়াত্বীন- হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফয়যাবাদী
৪৮. সিয়ানাতুল ঈমান -হযরত মাওলানা আব্দুল হাকীম লক্ষেèৗভী
৪৯. আল্ কাওকাবাতুশ্ শিহাবিয়্যাহ -আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলভী
৫০. তিহাফাতুল ওয়াহ্হাবিয়্যাহ্ -হযরত মাওলানা আবদুল হাফীয মুফতী-ই আগ্রা
৫১. আত্বইয়াবুল বয়ান -হযরত মাওলানা শাহ্ মুহাম্মদ নঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী
৫২. শামসুল ঈমান- হযরত মাওলানা শাহ্ মুহিউদ্দীন বদায়ূনী
৫৩. হিদায়াতুল ওয়াহ্হাবিয়্যীন- হযরত মাওলানা মুফতী নূরুল্লাহ্ মুরাদাবাদী
৫৪. ইসমাঈল দেহলভী আওর তাক্বভিয়াতুল ঈমান- হযরত মাওলানা শাহ্ আবুল হাসান যায়দ ফারুক্বী দেহলভী
৫৫. তা‘আরুফ-ই তাক্বভিয়াতুল ঈমান-হযরত মাওলানা সা‘ঈদ আরশাদ ফয়সালাবাদী
৫৬. নূর ও নার (তাওহীদ কে নাম পর) -হযরত মাওলানা প্রফেসর মাস্‘ঊদ আহমদ দেহলভী
৫৭. কুল্লী ঈমান-জনাব কর্ণেল (অব.) আনোয়ার মাদানী
৫৮. আন্ওয়ার-ই মুহাম্মদী- হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আমীর আকবরাবাদী
৫৯. ফাউযুল মুবীন বিশাফা‘আতিশ্ শাফে‘ঈন -হযরত মাওলানা শাহ্ ফযলে রসূল ক্বাদেরী বদায়ূনী
৬০. আল আক্বাইদুস্ সুন্নিয়্যাহ -হযরত মাওলানা নিলকুতী ক্বাযী মালাপুরাম, কেরালা (ভারত)
ইসমাঈল দেহলভীর এ পদক্ষেপেরে ফল কি হলো?
মৌলভী ইসমাঈল দেহলভী ও তার ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’-এর এ অশুভ পদক্ষেপের ফলে ইংরেজদেরই অশেষ উপকার হয়েছে। এ কারণেই ইংরেজ সরকারের কর্মকর্তারা ইসমাঈল দেহলভীকে নানাভাবে সাহায্যই করে গেছে। বিশেষত: সরকারী খরচে এ পুস্তক (তাক্বভিয়াতুল ঈমান)  বিপুল সংখ্যায় ছাপিয়ে মুসলিম সমাজে বিক্ষিপ্ততা ও অনৈক্য ছড়ানোর জন্য বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। ‘নবীগণ আলাইহিস্ সালাম-এর মানহানি ও মুসলিম সমাজে অনৈক্য ছড়ানোই ছিলো এ পুস্তকের প্রধান বৈশিষ্ট্য। সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, মৌলভী ইসমাঈল দেহলভীর কর্মকাণ্ড দ্বারা ইংরেজ সরকারের অকল্পনীয় উপকার হয়েছে। তিনি নিজে ‘তাক্বভিয়াতুল ঈমান’ লিখে এবং তাঁর পীর-মুর্শিদ সৈয়্যদ আহমদ বেরলভী ‘সেরাতুল মুস্তাকীম’ (যার অনুলিপি ও বিন্যাস করেছেন মৌং ইসমাঈল সাহেব) লিখে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য ও দলাদলির সৃষ্টি করে ইংরেজ সরকারেরই উপকার করেছেন। কারণ, তারা এদেশে ওহাবী মতবাদের অনুপ্রেবেশ ঘটিয়ে তার প্রচার-প্রসার করার পূর্বক্ষণ পর্যন্ত উপমহাদেশে অন্তত এ ওহাবী সম্প্রদায়টার অস্তিত্ব বৃহত্তর সুন্নী অঙ্গনে ছিলো না। মাওলানা হাকীম মাহমূদ আহমদ বরকাতী এ প্রসঙ্গে বলেছেন-
‘‘ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে শাহ্ আবদুল আযীয ও তাঁর ভাইদের উত্তরসূরী ও ছাত্রদের চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির আধিক্য দু’টি দলের জন্ম দিয়েছিলো- একটি দল, যার নেতা ছিলেন শাহ্ মুহাম্মদ ইসমাঈল দেহলভী, তাক্বলীদ বা ইমামদের মাযহাব অনুসরণের বিরোধী অর্থাৎ লা-মাযহাবী এবং মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহ্হাব নজদীর অন্ধ অনুসারী, আর অপর দল, যাঁরা হযরত শাহ্ আব্দুল আযীযের অনুসৃত পথ ও মত (সুন্নী মতাদর্শ) -এর অনুসারী।’’
[সূত্র: শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ আওর উনকা খান্দান, পৃ. ১৮৫]
উল্লেখ্য, ইংরেজদের উক্ত ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিলে এম. আসলাম সাহেবের নিম্নলিখিত মন্তব্য থেকেও-
ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর রাজনৈতিক পলিসি শুধু এ ছিলো যে, যেভাবে হোক চালবাজির মাধ্যমে মুসলমানদেরকে দুর্বল করা হোক!’’
[মার্ক্স, ইংলিশ, অনুবাদ ইশফাক বেগ মির্যা; পৃ. ৪৬]
মৌং আশ্রাফ আলী থানভীর লিখনীতে মৌং ইসমাঈল দেহলভী
মৌং আশরাফ আলী থানভী সাহেব তার ‘আরওয়াহ্-ই সালাসাহ্’ (ওরফে হিকায়াতে আউলিয়া)-তে মৌলভী ইসমাঈল দেহলভী সম্পর্কে বহু ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তিনি অবশ্য খুব সতর্কতার সাথে তাকে বাঁচানোর ভঙ্গিতে ঘটনাগুলো লিখেছেন। তাঁকে যাতে কেউ মিথ্যাবাদী কিংবা অপবাদদাতা বলতে না পারে সেদিকেও তাঁর সতর্ক দৃষ্টি ছিলো। এতদ্সত্ত্বে যেসব ঘটনা তিনি লিখে ফেলেছেন তা লক্ষণীয়। নিম্নে দু’টি ঘটনার উদ্ধৃতি দেয়া হলো-
এক. একদিন শাহ্ আব্দুল আযীয (রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি)’র ওয়াজ চলছিলো। সেখানে মৌং ইসমাঈল দেহলভী আসলো। আর সব শ্রোতার জুতোগুলো পানির কূপে (সিক্বায়া) ফেলে দিলো। ওয়াযের পর জুতোগুলো না পেয়ে সবাই হযরত শাহ্ সাহেবকে জানালো। তিনি বললেন, এটা ইসমাঈলের দুষ্টামী হবে। হয়তো সে পানির কূপে  সেগুলো ফেলে দিয়েছে। দেখা গেলো অনুরূপই ঘটেছে। (শাহ্ সাহেবের দরবারে সুন্নী মুসলমানরা আসুক- তা  ইসমাঈল দেহলভী পছন্দ করতেন না।)
দুই.   মৌলভী মুহাম্মদ আলী সাহেব ও মৌলভী আহমদ আলী সাহেব হযরত আবদুল আযীয (রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি)’র দরবারে আরয করলেন, ‘‘হযরত! মৌলভী ইসমাঈল তো ‘রফ‘ই ইয়াদাঈন’ (নামাযে অতিরিক্ত তাকবীরগুলোতে বারংবার হাত উত্তোলন) করতে আরম্ভ করেছেন। এর ফলে তো ফ্যাসাদ সৃষ্টি হবে। আপনি তাকে রুখে দিন।’’ যখন শাহ্ আব্দুল ক্বাদির সাহেব তাঁর দরবারে আসলেন, তখন তিনি (হযরত আবদুল আযীয) বললেন, মিঞা আবদুল ক্বাদির! তুমি ইসমাঈলকে বুঝিয়ে বলো যেন সে রফ‘ই ইয়াদাঈন থেকে বিরত থাকে। শুধু শুধু জনসাধারণের মধ্যে গোলমাল সৃষ্টি করায় লাভ কি?’’ শাহ্ আব্দুল ক্বাদির বললেন, ‘‘হযরত, আমি বলে দেবো; কিন্তু সে তো মানবে না, বরং সে (ফিক্বহ্ বাদ দিয়ে সরাসরি) হাদীস পেশ করবে।’’ তবুও শাহ্ আব্দুল ক্বাদির সাহেব মৌলভী মুহাম্মদ এয়াক্বুব সাহেবের মাধ্যমে মৌলভী ইসমাঈলকে বলে পাঠালেন, ‘‘তুমি ‘রফ‘ই ইয়াদাঈন’ করো না। এর ফলে শুধু শুধু ফিৎনা সৃষ্টি হবে।’’ মৌলভী ইসমাঈল জবাব দিলেন- ‘যদি সাধারণ লোকের ফিৎনার দিকে খেয়াল করা হয়, তবে এ হাদীসের কি অর্থ হবে- ‘‘যে ব্যক্তি উম্মতের মধ্যে ফ্যাসাদ হবার সময় আমার সুন্নাতের উপর আমল করবে সে শত শহীদের সাওয়াব পাবে’’? (অর্থাৎ ইসমাঈল দেহলভী ‘রফ‘ই ইয়াদাঈন’ না করাকে ফ্যাসাদ সাব্যস্ত করেছেন এবং এর মাধ্যমে শত শহীদের সাওয়াব লাভ করতে চেয়েছেন। যেমন আজকাল তারই অনুসরণে আহলে হাদীস করছে। তারা ইমাম বোখারীর নাম দিয়ে প্রতারণা করে রফ‘ই ইয়াদাঈন ইত্যাদি না করাকে সাওয়াব থেকে বঞ্চিত থাকার ধূয়া তুলছে ইত্যাদি।)
মৌলভী ইয়াক্বুব সাহেব শাহ্ আব্দুল ক্বাদিরকে মৌলভী ইসমাঈলের উক্ত জবাবের কথা জানালেন। একথা শুনে শাহ্ আব্দুল ক্বাদির সাহেব বললেন, ‘‘আমি তো মনে করেছিলাম ইসমাঈল আলিম হয়েছে। কিন্তু সেতো একটি হাদীসের অর্থও বুঝে নি। (অর্থাৎ মূর্খের মূর্খই রয়ে গেছে)।’’ তিনি উক্ত হাদীসে পাকের সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে বললেন, উক্ত হাদীস শরীফের বিধান তো তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সুন্নাতের বিরোধিতা করে সুন্নাতের পরিপন্থী কোন কাজ করা হয়; অথচ আলোচ্য বিষয়ে তো সুন্নাতের বিরোধিতা মোটেই করা হলো না; বরং অন্য একটি প্রামাণ্য সুন্নাতের উপর আমল করা হচ্ছে; (যা ইমাম-ই আ’যমের গবেষণানুসারে বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত) অর্থাৎ যেভাবে (ইমাম শাফে‘ঈ প্রমুখ ইমামের মতে) রফ‘ঈ ইয়াদাঈন সুন্নাত, তেমনি রফ‘ই ইয়াদাঈন না করাও (অকাট্যভাবে) সুন্নাত।’’ যখন মৌলভী মুহাম্মদ ইয়াক্বুব সাহেব এ জবাব মৌলভী ইসমাঈলকে শুনালেন, তখন তিনি নির্বাক হয়ে গেলেন, কোন জবাব দিলেন না।
উল্লেখ্য, জবাব দিতে না পেরে মৌলভী ইসমাঈল নিশ্চুপ তো হয়ে গেলেন, কিন্তু ‘রফ‘ই ইয়াদাঈন’ থেকে বিরত হননি। তবে মজার বিষয় হচ্ছে- শেষের দিকে যখন তিনি (তাঁর পীর সাহেব সৈয়্যদ আহমদ বেরলভীসহ) পেশোয়ারে গিয়েছিলেন এবং সেখানকার সুন্নী হানাফী পাঠান আলিমগণ এর বিপক্ষে আপত্তি করলেন, তখন ইসমাঈল সাহেব ‘রফ‘ই ইয়াদাঈন’ বর্জন করলেন এবং শত শহীদের সাওয়াব অর্জন করা থেকে বিরত রইলেন। [তাহক্বীক্বুল ফাত্ওয়া]
কারণ, এখন তো তাঁকেই শহীদ (!) হতে হবে। তখন তিনি যেন স্বচক্ষে তাঁরই ওই কথাকথিত শাহাদাত বরণের বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছিলেন। বালাকোটের যুদ্ধে পাঠান মুসলমানদের হাতে তা বাস্তবায়িত হয়েছিলো বৈ-কি।
পরিশেষে, কখনো কারো মাধ্যমে যে কোনভাবে ভুল-ভ্রান্তি সম্পাদিত হয়ে গেলে তা স্বীকার করে সেটার ক্বোরআন-সুন্নাহ্ সম্মত প্রতিকার করে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আল্লাহর নেক বান্দাদের মধ্যে এমন সুন্দর প্রবণতাই পরিলক্ষিত হয়। প্রখ্যাত সুন্নী আলিম মাওলানা মাহবূব আলী খানের ঘটনা এ ক্ষেত্রে সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। তিনি শানে রিসালত ও শানে বেলায়ত ইত্যাদির উপর একটি কাব্য (পুস্তক) রচনা করেছিলেন। তিনি তাঁর ধারণানুসারে সেটাকে আ’লা হযরতের প্রসিদ্ধ কাব্যগ্রন্থ ‘হাদাইক্বে বখশিশ’ (দু’ খণ্ডে রচিত)-এর ‘তৃতীয় খণ্ড’ হিসেবে নামকরণ করে এক  ওহাবী প্রেসকে সেটা ছাপানোর পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন। এদিকে প্রেসের ওহাবী লোকেরা সুযোগ বুঝে মাওলানা মাহবুব আলী খান সাহেবের ওই পুস্তকে ‘হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার শানে বেয়াদবী পূর্ণ কিছু কবিতা নিজেরা রচনা করে পুস্তকটি ছাপিয়ে দিলো। সরলমনা লেখকও সরল বিশ্বাসে পুস্তকটি বাজারজাত করার অনুমতিও দিয়ে দিলেন। পরবর্তীতে যখনই সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলো, আর তিনি ওই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বুঝতে পারলেন, তখন নিজের অসাবধানতার কারণে সংঘটিত ওই ভুলের জন্য করজোড় ক্ষমা চেয়ে ‘তাওবানামা’ ছাপিয়ে প্রকাশ করেছিলেন। কারণ এটাই হলো নিরাপদ ও ফলপ্রসূ পন্থা।
পক্ষান্তরে, ভুলের প্রতিকার যথাযথভাবে না করে এ ভেবে বেপেরোয়া হলে যে, লোকেরা لڑبڑھ کر خود ٹھیک ہوجائینگے  (লড়াই-সমালোচনা করে আপসে ঠিক হয়ে যাবে), ফিৎনা তার অশুভ শাখা বিস্তার করে ‘মুসলিম সমাজ’কে আরো দুর্বল করে ফেলবে এবং তজ্জন্য আল্লাহ্ ও রাসূলের নিকট  জবাবদিহি করতে হবে; অন্যদিকে সচেতন সমাজ ঠিকই তার অবস্থানকে সুদৃঢ় করে নেবে। কিন্তু এ ব্যাপারে যেকোন হঠকারিতাই ওই কুখ্যাত ‘ইসমাঈলী দর্শন!’ হিসেবে চিহ্নিত হবে বৈ-কি।